দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ এপ্রিল: ১৬ এপ্রিল। ঘটনাস্থল খড়্গপুর। রামনবমীর মিছিল ঘিরে পুলিশি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে খড়্গপুরে পথ অবরোধ এবং পুলিশকে হুঁশিয়ারি- নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ এবং মামলা করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ১৭ এপ্রিল। এবার ঘটনাস্থল মেদিনীপুর শহর। ‘মুখ্যমন্ত্রী ‘সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন’ অভিযোগ তুলে মেদিনীপুরের কোতোয়ালী থানায় FIR করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ‘নজিরবিহীন’ বিবাদে জড়িয়েছিলেন। থানার মূল ফটকে লাগিয়ে দিয়েছিলেন তালা! ফের একবার তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। অভিযোগ দায়ের হয় কমিশনেও। ২৬ এপ্রিল। ফের ঘটনাস্থল খড়্গপুর শহর। তৃণমূলের কাউন্সিলরের (মুকেশ হুমনে) বিজেপি-তে ‘ঘর ওয়াপসি’-র পর তাঁর অধীনে থাকা ৩২নং ওয়ার্ডের পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে গভীর রাত অবধি বেনজির লড়াই তৃণমূল-বিজেপি’র মধ্যে। মুকেশ সহ বিজেপি কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনিও। তাঁর মধ্যস্থতাতেই মহকুমাশাসকের নির্দেশে শুক্রবার প্রায় মধ্যরাতে তালা লাগানো হয় ৩২নং ওয়ার্ডের আয়মার ওই কার্যালয়ে। পরদিন (শনিবার) অবশ্য মহকুমাশাসকের মধ্যস্থতায় কার্যালয় তৃণমূলের দখলেই থাকে! আর, তারপরই মামলা হয় বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল সহ একাধিক বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। পুলিশের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়। তৃণমূল ও মহিলা তৃণমূলের তরফেও মামলা করা হয় ২টি। শ্লীলতাহানির মতো মারাত্মক অভিযোগও আনা হয়!

thebengalpost.net
শুক্রবার রাতে গাড়িতে অগ্নিমিত্রা পাল:

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের তরফে দেবাশীষ চৌধুরী, রবিশঙ্কর পাণ্ডেরা বলেন, “শুধু মুকেশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। আমাদের কর্মীরা যোগ দেয়নি। তাই বিজেপির পার্টি অফিস দখলের চেষ্টা শুক্রবার রাতে রুখে দিয়েছিলেন আমাদের মহিলা তৃণমূলের কর্মীরা। বিজেপি প্রার্থীর নেতৃত্বে তাঁদের শ্লীলতাহানি করা হয়। শনিবার মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক জানান পার্টি অফিস তৃণমূলের দখলেই থাকবে। আমরা বিজেপি প্রার্থী সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছি।” উল্লেখ্য যে, মেদিনীপুরে আসার পর থেকেই একের পর এক মামলা রুজু হয়ছে অগ্নিমিত্রা’র বিরুদ্ধে! তবে, তাতে আর বিচলিত নন বিজেপির ‘অগ্নিকন্যা’! রবিবার সকালে খড়্গপুরে অগ্নিমিত্রা বলেন, “পুলিশ ওদের, প্রশাসন ওদের। গণতান্ত্রিক উপায়ে লড়তে না পেরে, কাপুরুষের মতো মামলা দেবে এটাই তো স্বাভাবিক! মানুষ সব দেখছেন। আপনারা সাংবাদিকরা ছিলেন। সব দেখেছেন। আর, আমার ফেসবুক লাইভ সবসময় অন থাকে। শুক্রবার রাতে কি হয়েছে, না হয়েছে মানুষ দেখেছেন। এখনও দেখতে পাবেন। আমার গাড়ি ১ ঘন্টা আটকে রাখা হয়। পরে আমি ওখানে পৌঁছলে আমাদের বিরুদ্ধেই উস্কানিমূলক মন্তব্য করা হয়। তা সত্ত্বেও আমিই SDO-কে ফোন করে পার্টি অফিসে সেই সময় তালা লাগিয়ে, মীমাংসার প্রস্তাব দিই। শেষ পর্যন্ত ওই পার্টি অফিস অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়ার সাথে সাথে, আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিল!” অগ্নি’র হুঁশিয়ারি, “৪ জুন সব হিসেব হবে।” পাল্টা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, “হিসেব করবেন জনতা জনার্দন! কোনও বে-হিসেবি কাজকর্ম বরদাস্ত করবেন না মেদিনীপুর-খড়্গপুরের জনগণ।”