thebengalpost.in
কলকাতা হাইকোর্ট :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৯ সেপ্টেম্বর: একেই বোধহয় বলে “কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে” বেরিয়ে পড়া! স্বদেশ দাস নামে এক প্রাথমিক শিক্ষক-কে টেট (TET) পাস না করায় চাকরি থেকে বহিষ্কার করেছিল উত্তর দিনাজপুর DPSC (জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ)। মামলাকারী স্বদেশ দাস কলকাতা হাইকোর্টে এরকম আরও ১২ জনের তালিকা দিয়ে বসলো! তাঁরাও নাকি টেট পাস না করেই আজ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে চলেছেন সম্মানজনক বেতনের সহিত! মামলার গতিবিধি শুনেই সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মাথা ঘুরে গিয়েছিল! তাই তিনি সেই মামলা “জনস্বার্থ” (PIL) রূপ দিয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) – কে নির্দেশ দিল, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট থেকে নিয়োগ হওয়া ২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষকদের সম্পূর্ণ তালিকা আদালতে জমা করতে। ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই তালিকা আদালতে জমা করতে হবে।

thebengalpost.in
কলকাতা হাইকোর্ট :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এবং ২০১৫ সালে পরীক্ষা হলেও, সেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই নিয়োগ নিয়ে নানা ধোঁয়াশা ছিল। রাতারাতি মোবাইলে এসএমএস বা মেসেজ পাঠিয়ে নজিরবিহীনভাবে নিয়োগ সম্পন্ন করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য। বর্তমানে বিভিন্ন মামলাতেই তাঁর লেজে গোবরে অবস্থা! এই মামলাও তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। সেবার সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল ৪০-৪২ হাজার শিক্ষক নাকি নিয়োগ করা হয়েছিল। বাস্তবে তা ১৫ হাজার বলে এতদিন পর জানা যাচ্ছে! সেই নিয়োগেও দুর্নীতি। নথি ছাড়াই ১২ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সংখ্যাটা নাকি আরো বেশি বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সেজন্যই কলকাতা হাইকোর্ট সম্পূর্ণ তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে। এদিকে, বর্তমানে যে ১৬ হাজার ৫০০ নিয়োগ চলছে, তা নিয়েও হাজার প্রশ্ন! উচ্চ প্রাথমিকের প্যারা টিচারদের নাকি ভুল করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, যাঁরা প্যারা টিচার নয়, সেরকম প্রায় ২৫০ জনকে প্যারা টিচার তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখে ১৬ হাজার ৫০০ বলেও বাস্তবে ১২ হাজার ৫০০ জনের থেকেও নাকি কম জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও, অফলাইনে ফর্ম জমা দেওয়া প্রায় হাজার খানেক প্রার্থীর সঙ্গে নাকি প্রতারণা করেছেন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। পেপারে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁদের ফর্ম জমা নেওয়ার পর, তাঁদের নাকি ইন্টারভিউতেই ডাকা হয়নি। সেই ধরনের চাকরিপ্রার্থীরাও আদালতে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির ভুরি ভুরি অভিযোগে রীতিমতো বেসামাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।