দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ আগস্ট: বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘন্টার বনধ ঘিরে সারা রাজ্যের সাথে সাথেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুর, ‘রেল শহর’ খড়গপুরেও বুধবার সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত অশান্তি, ধস্তাধস্তি, পুলিশের অতি-সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেল। তবে, মোটের উপর জনজীবন সচলই আছে আজ সকাল থেকে। যদিও, রাস্তায় গাড়িঘোড়া বেশ কম। স্বাভাবিকভাবেই শহরের রাস্তাঘাটে লোকজনও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। এদিন সাত সকালেই শহরের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। বিশাল পুলিশবাহিনী অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ নেয়। রাস্তা পরিষ্কার করে। এরপর, নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সকাল এগারোটা নাগাদ সিপাইবাজারের জেলা কার্যালয় থেকে বিজেপির একটি মিছিল বেরোনোর সাথে সাথেই মিছিল আটকে দেয় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এরপরই, মিছিলের পুরোভাগে থাকা মহিলা কর্মী সহ বিজেপির সকল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ বেধে যায়। এক প্রকার টেনে হিঁচড়ে মহিলা কর্মী সহ অসংখ্য কর্মী-সমর্থকদের গাড়িতে তোলে পুলিশ। আটক করা হয় বিজেপির শহর মন্ডল সভাপতি দেবাশীষ দাস সহ নেতৃত্বদেরও। পুলিশের ভ্যান থেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁদের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালিয়েছে পুলিশ এবং অন্যায় ভাবে তাঁদের আটক করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে গোলাপীচক এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে বনধ সমর্থনকারীদের বিরূদ্ধে। ঘটনার পরই ভয়ে বাস থেকে নেমে যান যাত্রীরা। ইঁটের আঘাতে আহত হন বাসের চালক। চালক সহ বাসকর্মী ও বাসযাত্রীদের অভিযোগ, ১০-১২ জন বাইকে করে এসে রাস্তায় বাস থামিয়ে ইঁট, পাথর ও রড দিয়ে বাসে ভাংচুর চালায়। এরপরই বাইক নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনার পরই জেলা পুলিশের DSP এবং কোতোয়ালী থানার IC’র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
এদিন দুপুর নাগাদ, খড়গপুর স্টেশনে ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। রেললাইনে বসে পড়া থেকে শুরু করে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বনধ সমর্থনকারীরা। ছুটে আসে RPF ও GRP। এরপরই, বিক্ষোভকারীদের রেললাইন থেকে সরানোর কাজ শুরু করে রেলপুলিশ। বিক্ষোভকারীদের কার্যত চ্যাংদোলা করে সরাতে হয় RPF ও GRP-কে। তাঁদের সঙ্গে তুমুল বচসা, ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। ১৬ জনকে আটক করে খড়্গপুর জিআরপি। ঘটনা ঘিরে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় খড়গপুর স্টেশন চত্বর জুড়ে।