দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ আগস্ট: SIR-এর নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল। এই ইস্যুতে একে অপরের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন শাসক ও বিরোধী শিবিরের নেতারা। আর সেই আবহেই এবার মেদিনীপুর শহরের শুধুমাত্র একটি বুথেই ৪৯ জন মৃত ভোটারের ‘সন্ধান’ দিল বিজেপি। শহরের ৮নং ওয়ার্ডের ওই ১৬৬নং বুথে ৭১৪ জন ভোটারের মধ্যে ৪৯ জনই মৃত ভোটার বলে তথ্য সহ তুলে ধরেছেন বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইত। তিনি ইতিমধ্যেই ইমেইল মারফত নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, মেদিনীপুর বিধানসভাতে এরকম মৃত ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার! এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ‘ভুতুড়ে ভোটার’ আছেন বলেও শঙ্করের দাবি। বিজেপি-র এই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে ১৬৬নং বুথের বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) কবিতা চাবড়ি এর দায় চাপিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকদের উপরই।

thebengalpost.net
শহরের একটি বুথেই ৪৯ জন মৃত ভোটার:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর পুরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ১৬৬নং বুথের ৪৯ জন মৃত ভোটারের মধ্যে কেউ মারা গিয়েছেন ৭ বছর আগে তো কেউ ৩ বছর আগে। শনিবার তাঁদের (মৃতদের) পরিবারের সদস্যরা ‘মৃত্যুর’ কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন। তবে, বিএলও এখনও কেন নাম বাদ দেয়নি, সেই প্রশ্নের উত্তর তাঁদের কাছে অজানা বলেই দাবি! ১৬৬নং বুথের বাসিন্দা, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, তাঁর বাবা অজিত কুমার ঘোষের মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৩ বছর আগে, মা আভারানি ঘোষের মৃত্যু হয়েছে ৭ বছর আগে। কিন্তু এখনও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েনি। একই বক্তব্য স্নেহা সাহা নামে এক তরুণীরও। তাঁর বাবা অমরেন্দ্রনাথ সাহার মৃত্যু হয়েছে ৩ বছর আগে। কিন্তু, সর্বশেষ ভোটার তালিকাতেও (২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত) বহাল তবিয়তেই তাঁর নাম আছে। এনিয়ে বিজেপি নেতা শঙ্কর গুচ্ছাইতের অভিযোগ, “বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুধুমাত্র একটি বুথেই আমরা ৪৯ জন মৃত ভোটারকে চিহ্নিত করেছি। যে কাজ বিএলও-র করার কথা। আসলে এই মৃত ভোটার বা ভুয়ো ভোটাররাই তৃণমূলের ছাপ্পা ভোট, রিগিং, বুথ জ্যাম্পের মশলা! আর সেজন্যই ওরা SIR-কে এত ভয় পাচ্ছে।” যদিও, বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহী। তিনি বলেন, “মৃত ভোটার মানেই তৃণমূল কে বলল! বিজেপি-র দাবি বিভ্রান্তিকর। তবে এটা ঠিক, অনেকের নামই হয়তো নানা কারণে বাদ পড়েনি। আমাদের দলও এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই নির্বাচনের কমিশনের নজরে এনেছে।” অন্যদিকে, এই ভুলের ‘দায়’ সরাসরি প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘাড়েই চাপিয়েছেন ওই বুথের বিএলও কবিতা চাবড়ি। তিনি বলেন, “আমরা বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি খোঁজ করে ডেথ সার্টিফিকেট সহ বিডিও অফিসে জমা দিই। এবার প্রশাসনের আধিকারিকরা নাম কেন বাদ দেননি সেটা তাঁরাই বলতে পারবেন!” মেদিনীপুর সদরের মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখার্জি বলেন, “মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের যে ড্রাফট রোল প্রকাশিত হবে, সেখানে মৃত ভোটারদের নাম থাকবে না।”