দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ সেপ্টেম্বর:”আমার প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের বলবো, ক্লাস এইটের একটি বইয়ের একটি অংশে দুর্নীতিগ্রস্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম আছে। শিক্ষকদের বলবো, দয়া করে ওই অংশ-টা ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াবেন না! এড়িয়ে যাবেন বা স্কিপ করে যাবেন।” জেলা শহর মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের মঞ্চে শিক্ষক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে সোমবার এমনটাই বললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যে অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস বইয়ে সংযোজিত সিঙ্গুর আন্দোলনের অংশটির কথাই বলতে চেয়েছেন তা বলাই বাহুল্য! এদিন তিনি এও বললেন, “এ রাজ্যের অবস্থা দেখে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলছিলেন, গরীব খুঁজছে ছাদ, আর নেতারা টাকা রাখার জন্য কিনছেন ফ্ল্যাট।” মেদিনীপুরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। স্মরণ করিয়ে দেন ‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা-দের কথা। এমনকি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি রাজ্য বাসীর সামনে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য মামলাকারী ববিতা সরকার-কেও কুর্নিশ জানান শুভেন্দু!

thebengalpost.net
অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী:

এদিন, ‘বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা’ কমিটির সভাপতি তথা জেলা বিজেপির সহ সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি’র উদ্যোগে আয়োজিত শিক্ষক দিবসের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনৈতিক কাজকর্ম নিয়েই সরব ছিলেন প্রধান বক্তা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, “আজ শিক্ষক দিবসের দিন লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়, এরাজ্যে শিক্ষকদের যে জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তা ভাবতে গেলে! এখন প্রকৃত শিক্ষক আর ভুয়ো শিক্ষক খুঁজতে হচ্ছে আদালতকে।” তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পার্থ ঘনিষ্ঠ তৃণমূল শিক্ষক নেতা তথা প্রাক্তন ডিপিএসসি চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিষই থেকে শুরু করে চাকরির ‘মিডলম্যান’ কালীপদ পতি-দেরও বেনজির আক্রমণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে হলদিয়ায় পোস্টার পড়া নিয়ে আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-কে! বলেন, “জ্বালা জ্বালা! বুকের জ্বালায় এসব করাচ্ছেন ভাইপো। আমার বিরুদ্ধে আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা বকছে।” শুভেন্দু অধিকারী এদিন উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাতে ‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা’ তুলে দিয়ে বলেন, “গীতা ছাড়া গতি নেই। গীতার শিক্ষা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা। গীতা পড়ুন।‌ রামায়ণ-মহাভারত পড়ুন।” আগামীদিনে যে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত সিলেবাস তৈরি হবে, সেখানে গীতা বা রামায়ণ-মহাভারতের প্রভাব থাকবে বলেও উল্লেখ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।