দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ অক্টোবর: পড়শি দেশে যখন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, মেদিনীপুরে তখন সম্প্রীতির নজির! দুর্গা প্রতিমা’র নিরঞ্জন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করেছেন শেখ আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে শেখ রাজু, শেখ ইরফান, শেখ রহিম প্রমুখরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, লুলু দাহ, রঞ্জিত রানা-রাও। জেলা মেদিনীপুরের গান্ধী ঘাটে যেন এক সম্প্রীতির মিলন মেলা! মেদিনীপুর পৌরসভার ৭০ জনের এই দলে অন্তত ৫৫ থেকে ৬০ জন মুসলিম যুবক। ১০-১২ জন হিন্দু যুবক। পুরো কাজটি আন্তরিকতার সাথে পালন করেছেন তাঁরা। নিরঞ্জনের পর কাঠামোগুলি নদী থেকে তুলে আনা ছাড়াও, গান্ধী ঘাট ও ডি.এ.ভি ঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেওয়ার দায়িত্বও পালন করেছেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে। খুশি হয়ে মেদিনীপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপারসন সৌমেন খান তাঁদের সংবর্ধনাও দিয়েছেন সোমবার। উত্তরীয়, ফুল ও মিষ্টি দিয়ে মতিনদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
কাজে ব্যস্ত রাজু, রহিমরা :

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, মেদিনীপুর শহরের গান্ধী ঘাট ও ডিএভি ঘাটে প্রায় ২০০ টি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে দশমীর দিন থেকে। আর, বরাবরের মতোই এবারও সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল মেদিনীপুর পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা শেখ আব্দুল মতিনের হাতে। মেদিনীপুর পৌরসভা এবং কোতোয়ালী থানার সহযোগিতায় প্রতিমা নিরঞ্জন ও তার পর ঘাট পরিষ্কারের কাজ করেছেন তাঁর নেতৃত্বাধীন ৭০ জন যুবকের একটি দল। যাদের সিংহভাগই মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবক। তাই, পড়শি দেশের এই সাম্প্রদায়িকতার আবহে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির শহর মেদিনীপুরও তাঁদের সংবর্ধিত করে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা দিতে চাইল! পৌরসভার চেয়ারপারসন সৌমেন খান জানিয়েছেন, “দুর্গাপুজোর পর দশমী থেকে পুরসভা এবং কোতোয়ালি থানার উদ্যোগে কাঁসাই নদীর গাঁধী ঘাট এবং ডিএভি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিসর্জনের পর কাঠামো-সহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে ঘাট পরিষ্কারের কাজে যুক্ত ছিলেন শেখ আব্দুল মতিন সহ মুসলিম সম্প্রদায়ের ৭০ জন যুবক। মেদিনীপুর শহর সম্প্রীতির শহর। তাই তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।” আর, মতিন জানিয়েছেন, “বেশ কয়েকবছর ধরেই রাজু, রহিম, ইরফান, রঞ্জিতদের নিয়ে এ কাজ করে আসছি। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় মেদিনীপুর পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসন। এবারও তাই হল। সুষ্ঠুভাবে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মেদিনীপুর শহর শান্তি ও সম্প্রীতির শহর। এই শহরের বাসিন্দা হিসেবে গর্বিত। পৌরসভা সংবর্ধনা দেওয়ায় আরও ভালো লাগছে।”

thebengalpost.net
সংবর্ধনা দেওয়া হল পৌরসভা থেকে :