দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ মে:”গাঁওবালো মে আ রাহা হু….মুঝে মত রোকো!” বাসন্তী (হেমা মালিনী)-কে বিয়ে করতে চেয়ে জলের ট্যাঙ্কে উঠেছিলেন ‘শোলে’ সিনেমার বীরু (ধর্মেন্দ্র)। হাতে মদের বোতল নিয়ে সেই বিখ্যাত ডায়লগ- “বাসন্তী কে সাথ মেরা লগন বস হোনে বালা থা…লেকিন বিচ মে আ গেয়ি ও বুঢ়ি মউসি!” তাই, বাসন্তী-কে না পেলে জলের ট্যাংক থেকে নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকি দিচ্ছিলেন বীরু ওরফে ধর্মেন্দ্র। ১৯৭৫ এর সেই বিখ্যাত সিনেমার (শোলে) ‘মজার দৃশ্য’-ই যেন বৃহস্পতিবার ভর দুপুরে দেখলেন মেদিনীপুর শহরবাসী। বেলা বারোটা-সাড়ে বারোটা নাগাদ শহর মেদিনীপুরের শেখপুরা সংলগ্ন পোলট্রি পুকুর পাড়ে অবস্থিত পৌরসভার প্রায় ৭০-৮০ ফুট উঁচু জলের ট্যাঙ্কে সবার অলক্ষ্যে উঠে পড়েন বছর ৩০’র ভিকি পাওয়ার। লোকজন যখন দেখেন, মেদিনীপুরের ‘বীরু’ ভিকি হুমকি দিতে থাকেন- “আমিও আমার বউয়ের কাছে চলে যাব!” কোনোভাবেই যুবককে নিচে নামানো যায় না। অবশেষে, মেদিনীপুর দমকল বিভাগ এবং কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মীরা এসে কোনোমতে যুবককে উপর থেকে নিচে নামাতে সক্ষম হন।
অবশ্য, নিচে নেমেই ভিকির ডায়লগ- “আমাকে কিন্তু তোমরা বাঁচাতে পারবে না। আমি আমার বউয়ের কাছে যাবই!” এত দূর পর্যন্ত ঘটনাটি মজার হলেও, এর পিছনে এক করুণ কাহিনী শোনা গেল স্থানীয়দের মুখে। জানা যায়, শেখপুরা ও মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন ভুঁইয়াপাড়ার বাসিন্দা ভিকি’র স্ত্রী পারিবারিক অশান্তির কারণে গতকাল অর্থাৎ বুধবার কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন। দু’জনের কোনো ছেলেমেয়ে নেই। স্ত্রী’র মৃত্যুর পর থেকেই ভিকি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন! “তার সঙ্গে মদ্যপান করার কারণেই হয়তো মাথায় এই উদ্ভট ভাবনা এসেছিল! এভাবে আত্মহত্যা করতে চাইছিল”, জানালেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে, মদ্যপ ভিকি-কে ভরদুপুরে নিরাপদে নামিয়ে আনতে রীতিমত কালঘাম ছুটে যায় পুলিশ ও দমকল কর্মীদের। শেষ পর্যন্ত বেলা ১টা নাগাদ ভিকি-কে নিচে নামিয়ে আনেন তাঁরা। আপাতত, তাঁকে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় আটক করে নিয়ে গেছেন পুলিশ কর্মীরা। যদিও, যাওয়ার আগেও সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে হুমকি দিয়ে গেছেন ভিকি, “আমাকে কিন্তু তোমরা বাঁচাতে পারবে না। আমি আমার বউয়ের কাছে যাবই!”