দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ মে: “চোখের সামনে আর দেখতে পারছিনা! দিনে দিনে বাচ্চা আমাদের নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। দিদি একটা কিছু ব্যবস্থা করুন। আমাদের বাচ্চার চিকিৎসার সুযোগ করে দিন। আমরা অন্য কিছু চাই না!” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে কাতর আবেদন হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর অসহায় বাবা-মা’র। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরি এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর বিমল দোলই ও মল্লিকা দোলই- এর বছর চারেকের সন্তান শিবম দোলই হৃদরোগে আক্রান্ত। একেবারে ছোট বেলাতেই ধরা পড়ে শিবমের এই সমস্যা। পরিবারের অভিযোগ, রোগ ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শ মত দেপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে বার বার হন্যে হয়ে ঘুরেও কোনও চিকিৎসা পায়নি শিশুটি!
তাঁর অসহায় বাবা-মা জানান, “গত চার বছর ধরে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।” অসুস্থ শিবমের বাবা বিমল দোলই’য়ের অভিযোগ, “মেদিনীপুর থেকে বার বার পাঠানো হচ্ছে কলকাতার হাসপাতালে। ৮ থেকে ৯ বার পিজি হাসপাতালে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে গেছি। প্রতিবারেই প্রেসক্রিপশনের ‘রিগ্রেট নো বেড’ স্ট্যাম্প লাগিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর পারছিনা! অবশেষে গত ৪-মে ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। কোথায় যাবো কিছুই বুঝতে পারছিনা। বাংলার দিদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করছি, আমার ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেদিন। আমাদের ছেলেটাকে বাঁচান। চোখের সামনে আর দেখতে পারছিনা।”
অসুস্থ শিবমের মা মল্লিকা দোলই বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছেলেকে পাঠাতাম। বেশ কিছুদিন আগে ওখানেই অসুস্থতা ধরা পড়ে। তারপর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই চিকিৎসকরা কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন। কলকাতার পিজি হাসপাতাল, মুকুন্দপুর বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গেছি। কোনও চিকিৎসা হয়নি। ডাক্তার বাবুরা বলেছেন, ছেলের হার্টে ফুটো আছে। অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু অপারেশোন হচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে বেড নেই বলে, বার বার আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিনে দিনে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে ছেলে। আর দেখতে পারছিনা। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য ‘দুয়ারে পিজির ডাক্তার’রা আসছেন। আমরা বারবার ছুটেও কেন ছেলের চিকিৎসা পাচ্ছিনা। আমাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও আছে। তবু কেন অপারেশন হচ্ছে না? কোথায় যাবো? কাকে বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না। শুনেছি, ‘দিদি’তো অনেক কিছু করেন। দিদির কাছে হাত জড় করে অনুরোধ করছি, আমার ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেদিন। আমরা তো আর কিছু চাইছিনা।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”