দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ আগস্ট: যুবকের রহস্য মৃত্যু জেলাশহর মেদিনীপুরের অদূরে! ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহর লাগোয়া গুড়গুড়িপাল থানার গোলাপীচক এলাকায়। মৃতের নাম বাপ্পাদিত্য সাঁতরা। মাত্র ৩২ বছরের যুবকের মৃত্যু ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে! মৃতের মা স্পষ্ট অভিযোগ করেছেন, “আমার ছেলেকে খুন করেছে বউমা। বউমার অন্য সম্পর্ক নিয়ে প্রায়ই অশান্তি হতো। এই কথা জানাজানি হতেই, ঠান্ডা মাথায় আমার ছেলেকে খুন করেছে বউমা।” ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করেছে। বাপ্পাদিত্য’র দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে পৌঁছলে শোকে ভেঙে পড়েন পরিবার-পরিজনেরা। দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, বাপ্পাদিত্য পেশায় গাড়ির চালক ছিলেন। দেড় বছরের সন্তান-কে নিয়ে সোমবার স্বামী-স্ত্রী বাড়িতেই ছিলেন। বাপ্পাদিত্য’র মা গিয়েছিলেন তাঁর বাপের বাড়ি। বিকেলের দিকে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করেন বাপ্পাদিত্য’র স্ত্রী। প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন খাটের উপর শুয়ে আছে বাপ্পাদিত্য! বিছানায় লোহার রড, বটি; আর নিচে পড়ে রয়েছে শাবল। উপরে ফ্যানের সঙ্গে একটি শাড়ি বাঁধা! স্থানীয়রাই দেহ উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশও। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসকেরা বাপ্পাদিত্যকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, “বাড়িতে মাঝে মধ্যেই গোলমাল হতো! নানা বিষয় নিয়েই অশান্তি ছিল। তাই খুনের ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে।” এদিকে, মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়িতে পৌঁছলে মৃত বাপ্পাদিত্য’র মা আনন্দরাণী সাঁতরা বলেন, “আমি সোমবার বাড়িতে ছিলাম না। এই খবর শুনে এসেছি। মাঝে মধ্যেই ছেলেকে ধরে মারধর করতো বউমা। আমাকেও মেরেছে একাধিকবার। ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল। আমার ছেলেকে বউমাই খুন করেছে। আমি চাই ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে আর কারুর এরকম সাহস না হয়।” বাপ্পাদিত্য’র মামা ডেভিড আকাশ বলেন, “বছর খানেক ধরে একটি ছেলের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানাজানি হতেই অশান্তি শুরু হয়। মাঝে মধ্যেই মারধোরও করত। প্রাণে মারার হুমকিও দিত। আমাদের অনুমান বাপ্পাদিত্যকে খুন করা হয়েছে! পুলিশের কাছে ঘটানার প্রকৃত তদন্ত চেয়ে লিখিত কাগজ জমা দিয়েছি।” জানা গেছে, মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক চাইছেন সকলেই।