দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ সেপ্টেম্বর: বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী থানার গোবরুর কাছে কুচাকলা গ্রামে। ছোট থেকেই থাকত খড়্গপুর গ্রামীণ থানার রূপনারায়ণপুরে গ্রামে নিজের মামা বাড়িতে। সাত বছরের নাবালিকা গতকাল (শুক্রবার) সকাল থেকে মাসির সাথে বেরিয়েছিল। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল দু’জনই! বিকেলে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মামাবাড়ির লোকেরা। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এরপর, শনিবার সকালে শালবনী ব্লকের ভাদুতলার জঙ্গলে পাতা কুড়াতে গিয়ে, ঝোপের মধ্যে এক নাবালিকার দেহ দেখতে পান কয়েকজন। তাঁরা শালবনী থানায় খবর দিলে, পুলিশ এসে সাত বছরের ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে। পরিবারের, সদস্যরা এসে গতকাল থেকে নিখোঁজ থাকা সেই নাবালিকাকে চিহ্নিত করেন। নিখোঁজ থাকা এবং মৃত নাবালিকার বাবার নাম রঞ্জিত সিং। এদিকে, আজ সকালে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় মাসি প্রতিমা সিং (৩০) এর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর দুপুর নাগাদ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক অনুমান মাসিই তাকে খুন করেছে, তবে খুনের প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। আগামীকাল তাকে আদালতে তুলে পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে, মৃত নাবালিকার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে শালবনী থানার পুলিশ! রহস্যজনক এই মৃত্যুতে শোকে পাথর নাবালিকার বাবা-মা সহ পরিবার-পরিজনেরা।
প্রসঙ্গত, শালবনীর কুচাকলা গ্রামের রঞ্জিত সিংয়ের ৭ বছরের মেয়ে (স্নেহা) ছোটো থেকেই নিজের মামা বাড়িতে থাকত। গতকাল মাসির সাথে বেরিয়ে নিখোঁজ ছিল। এরপরই, শনিবার তার নিজের বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় (ভাদুতলা) জঙ্গলে দেহ উদ্ধার হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঝোপের মধ্যে দেহ পড়ে ছিল। সামনেই জুতো জোড়া ছিল। গলায় দড়ির ফাঁসের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছিল! আর, একটি দড়িও সামনে পড়ে ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। যদিও, শালবনী থানার পুলিশ দড়ি উদ্ধারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। নিখোঁজ নাবালিকার নিখোঁজ ডায়েরি যেহেতু হয়েছিল খড়্গপুর গ্রামীণ থানায়, সেখানেই এই মৃত্যুর তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শালবনী থানার আধিকারিকরা। এদিকে, মৃত নাবালিকার মামা খোকন সিং এসেও নাবালিকাকে সনাক্ত করেন। ততক্ষণে বাবা-মা’ও চিহ্নিত করেছেন তাঁদের কন্যাকে। পরিবারের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর, পুলিশ ওই নাবালিকার মাসি প্রতিমা সিং নামে বছর ৩০ এর মহিলা-কে গ্রেফতার করেছে। জেরায় নাকি খুনের অভিযোগ স্বীকার করেছে প্রতিমা! তবে খুনের কারণ জানতে চাইলে ‘অসংলগ্ন’ কথাবার্তা বলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। আগামীকাল তাকে আদালতে তুলে, আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে, রহস্যজনক এই মৃত্যু বা খুনের কারণ নিয়ে এখনও দ্বন্দ্বে পরিবার-পরিজন সহ সকলেই!