দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ জুন: জঙ্গলের চোরা শিকারীদের হাত থেকে ইন্ডিয়ান ক্যামেলিয়ন বা রঙিন প্রজাতির ভারতীয় গিরগিটি উদ্ধার করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দিলেন মেদিনীপুরের তিন যুবক। সোমবার মেদিনীপুর বনবিভাগের শালডাঙ্গার জঙ্গল থেকে এই ইন্ডিয়ান ক্যামেলিয়ন উদ্ধার করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “দিশারী ফাউন্ডেশন” এর সদস্য সৌরভ সাউ এই ক্যামেলিয়ন (Chameleon) বা একধরনের বিরল প্রজাতির ভারতীয় গিরগিটি শিকারিদের হাত থেকে উদ্ধার করে। তার সঙ্গে ছিলো অন্য দুই সদস্য শেখ ইসমাইল ও অঞ্জন ঘোষ। তারপর সেটিকে কিভাবে বনদপ্তরের হাতে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে তারা যোগাযোগ করে পরিবেশ প্রেমী শিক্ষক মণিকাঞ্চন রায়ের সাথে। তাঁর সাহায্যে মেদিনীপুর বনবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই ক্যামেলিয়নটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় মেদিনীপুর রেঞ্জের আধিকারিক জুঁই চক্রবর্তী’র হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মেদিনীপুর বনবিভাগের এডিএফও (ADFO) বিজয় চক্রবর্তী সহ বন্দপ্তরের আধিকারিকরা যুবকদের এই মানসিকতায় খুশি হন। এডিএফও বিজয় চক্রবর্তী জানান, “এগুলি খুবই মূল্যবান। এদের ধরা আইনত অপরাধ। প্রাকৃতিক ভাবে এদেরকে বাঁচতে দিতে হবে।কোনো কারণে এগুলোর শিকার যাতে না হয়, সেজন্য এরকম উদ্যোমী ছেলেদের এগিয়ে আসতে হবে।” পরিবেশ প্রেমী শিক্ষক মণি বাবু বলেন, “এগুলোকে প্রাকৃতিক ভাবে যাতে বাঁচানো যায় তারজন্য বনদপ্তরের আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করি। ওনাদের আন্তরিকতায় আজকে ইসমাইল, অঞ্জন এবং সৌরভ’কে বিট অফিসে পাঠিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করি।” মেদিনীপুরের রেঞ্জ অফিসার জুঁই চক্রবর্তী বলেন, “এরকম স্পিসিসকে আমরা আজকে সংরক্ষণ করলাম, আগামী কাল বা পরশু জঙ্গলে এটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।” “এভাবেই বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য টিকে থাকুক” বললেন ভাদুতলার রেঞ্জ অফিসার পাপন মোহান্ত। অপরদিকে, বন্যপ্রাণী গবেষক রাকেশ সিংহ দেব জানিয়েছেন, “বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যের জন্য এই ক্যামেলিয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষাকাল এদের প্রজনন ঋতু। তাই, এই সময় এদের বেশি দেখা যায়। সেই সুযোগে চোরা শিকারীরা এদের ধরে পাচার করে দেয়। ওদের ধন্যবাদ এভাবে বন্যপ্রাণ’কে উদ্ধার করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।”