thebengalpost.in
বিষয়টিকে দৈবিক বলে মানতে রাজি নন বিজ্ঞানীরা :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ জুলাই: ঝিনুকের মধ্যে শিব ঠাকুরের প্রতিকৃতি! অলৌকিক এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। ঘটনাটি ঘটেছে সবং ব্লকের তেমাথানী অঞ্চলের লুটুনিয়া গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লুটুনিয়া গ্রামের ফুলমণি সরেন নামে এক মহিলা হাউর এলাকার একটি পুকুর থেকে ঝিনুক তুলে নিয়ে আসেন আর পাঁচটা দিনের মতো। রবিবার বাড়িতে ফিরে সেই ঝিনুক গুলি ভাঙতে গিয়ে দেখেন, একটি ঝিনুকের মধ্যে যেন সাক্ষাৎ শিব ঠাকুরের প্রতিকৃতি! ঝিনুকের ওপরের ও নীচের দুটি খোলাতেই শিব ঠাকুরের মূর্তি দেখতে পান তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এরপর তাঁরা ঝিনুকটি পাশাপাশি মানুষদের দেখালে সকলেই অবাক হয়ে যান! খবর পেয়ে পৌঁছন, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রধান সহ অন্যান্যরা। তাঁরাও রীতিমতো বিস্মিত হয়ে যান।

thebengalpost.in
ঝিনুকের মধ্যে শিব ঠাকুরের প্রতিকৃতি :

প্রসঙ্গত, রবিবারের এই ঘটনার কথা ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সমাজ মাধ্যমেও। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়। সকলেই ফুলমণির উদ্দেশ্যে বলছেন, “তোমরা ভাগ্যবান। এই অতিমারির মধ্যে দেবাদিদেব মহাদেব তোমার বাড়িতে এসেছেন!” যদিও, আপাত শান্ত প্রকৃতির ফুলমণি, তাঁর স্বামী ও সন্তানেরা বিষয়টি নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বুঝতে পারছেন না এটা নিয়ে কী করবেন। যদিও, স্থানীয় পঞ্চায়েতের লোকজন তাঁকে বলেছেন, আপাততো এটি তাঁদের কাছেই রাখতে এবং পূজার্চনা করতে। অপরদিকে, এই ঘটনাটিকেই “দৈবিক” বা “অলৌকিক” রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও, মানতে রাজি নন জীববিজ্ঞানী কিংবা বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক নন্দদুলাল ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, “ঝিনুকের মধ্যে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফলে কিছু কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তাতেই হয়তো এরকম প্রতিকৃতি পেয়েছে। তবে, কোন কিছুই অলৌকিক হতে পারে না। সবটাই লৌকিক বা বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে বিশ্লেষণ করতে হবে।” এ নিয়ে গুজব ছড়ানো থেকেও তিনি বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা আগামীকালই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

thebengalpost.in
বিষয়টিকে দৈবিক বলে মানতে রাজি নন বিজ্ঞানীরা :

অপরদিকে, এই বিষয়টি নিয়ে মেদিনীপুর কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গৌতম ঘোষ বললেন, “ঝিনুকের খোলার ভেতর ও মেনটেল পর্দার বাইরে বাইরে থেকে কোন অনুপ্রবেশ ঘটে থাকলে (যেমন, বালিকণা, ছোট হাড়ের টুকরো, কোন পরজীবী ইত্যাদি) ঝিনুক আত্মরক্ষার্থে তার বাইরে একরকম ক্ষরণের মাধ্যমে তার উপর একটি স্তর তৈরি করে দেয়, অনেক ক্ষেত্রে যা থেকে কিছু প্রজাতিতে মুক্ত পাওয়া যায়। এই মুক্তোর আকৃতিটি, সাধারণত, সেই বাইরে থেকে প্রবেশ করা বস্তুটির আকৃতিই হয়। কাকতালীয়ভাবে অনেক সময় সেই আকৃতি গুলি আমাদের পরিচিত বিভিন্ন বস্তু বা বিষয়ের সঙ্গে মিল পেলে আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই। এটি খুব স্বাভাবিক, এর পিছনে দৈব কিছু নেই। কিছু কিছু জায়গায়, কৃত্রিম মুক্তা চাষে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন আকৃতির সূক্ষ্ম বস্তু ঢোকানো হয়, যাতে তার থেকে প্রাপ্ত মুক্তা, সেই আকৃতি পাওয়া যায়।”