দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ জুন: পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার জট কাটাল আদালত। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে শুনানি শেষে, মামলাকারীদের আপত্তিকেই মান্যতা দিলেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। জানিয়ে দিলেন, আবেদনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল (স্ব-মূল্যায়ন) রিপোর্টের কোনও গুরুত্ব থাকবেনা নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। ওই রিপোর্ট বা স্ব-মূল্যায়নের প্রয়োজন নেই। যদিও, গত ১৬-৩০ এপ্রিলের মধ্যেই যেহেতু সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবেদন জানিয়েছিলেন, সেক্ষেত্রে এই রিপোর্ট সহই তাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবারের নির্দেশের পর সেই রিপোর্ট সম্পূর্ণ ‘গুরুত্বহীন’ বা ‘বাতিল’ হয়ে গেল বলেই আইনজীবীরা জানিয়েছেন। আইনজীবীদের মারফত আদালতের নির্দেশের বিষয়টি মৌখিকভাবে তাঁর কাছে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (DPSC-র) চেয়ারম্যান অনিমেষ দে। তিনি এও জানিয়েছেন, “এমনিতেই মূল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল রিপোর্টের বা এই ৩০ নম্বরের কোনও গুরুত্ব ছিলনা। তবে তাতেও অপত্তি জানিয়েছিলেন কিছু শিক্ষক। ৩০ নম্বরের ওই সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল রিপোর্টটি তাই আদালতের নির্দেশে বাতিলের খাতায় চলে যাবে বলেই প্রাথমিকভাবে আইনজীবীদের মারফত শুনেছি। আদালতের নির্দেশের লিখিত প্রতিলিপি হাতে পেলে সবটা বুঝতে পারব।”

প্রসঙ্গত, প্রায় ১৭ বছর পর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ (DPSC)। তবে, মামলার গেরোতে তা থমকেও গিয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত, সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল (Self Appraisal) রিপোর্ট বা স্ব-মূল্যায়নে আপত্তি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মিলন কুমার সিং সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। গত ২২ মে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এনিয়ে সব পক্ষের হলফনাফা চেয়েছিলেন। সেইসঙ্গেই পরবর্তী প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশও দিয়েছিলেন। অবশেষে জট কাটাল সেই আদালতই। মঙ্গলবার (২৪ জুন) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল রিপোর্টের কোনও ভিত্তি নেই। নিয়োগকর্তা অর্থাৎ ডিপিএসসি-ও নিজেদের হলফনামায় তা স্বীকার করেছে। সেক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সাথে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৩০ নম্বরের যে ‘সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল’ (স্ব-মূল্যায়ন) রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছিল, তা পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া হল। তবে, NCTE-র নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়ার অন্যান্য যোগ্যতাবলী একই থাকবে। সেইসঙ্গে নিয়োগের প্যানেল তৈরিতে এক্সপিরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতাকেই যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে তাও জানিয়েছেন বিচারপতি। ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান অনিমেষ দে বলেন, “প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমরা এক্সপেরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি। আদালতও তেমনটাই জানিয়েছেন। ৩০ নম্বরের সেল্ফ অ্যাপ্রেসাল রিপোর্টটি মূল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ প্যানেল তৈরিতে এমনিতেই কোন প্রভাব ফেলত না!” তিনি এও জানিয়েছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়াতে দ্রুত পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।