দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ আগস্ট: “বডি না পড়লে রাজনীতি হবেনা! একটা-দুটো লাশ যদি না পড়ে, তাহলে কিন্তু মোড় ঘুরবে না!” ভাইরাল ভিডিও (যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট)-র নেপথ্যে থাকা (পর্দার পেছনে) ব্যক্তির ঠিক এমনই উস্কানিমূলক মন্তব্যে পা দিয়ে, পর্দার সামনে থাকা ব্যক্তি (দাবি, বিজেপি-র চন্দ্রকোনা ২নং মন্ডলের সভাপতি) বলেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই। বডি যদি না পড়ে, কোনদিনই মোড় ঘুরবেনা! বডি পড়তেই হবে।…আর আমরা নিশ্চিত, বডি ওইদিন পড়বেই।” ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে একটি সংগঠনের ডাকে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট)-র নবান্ন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সোমবার (২৬ আগস্ট) তিনটি ‘ভিডিও’ (২৫ আগস্ট রেকর্ড করা হয়েছে) প্রকাশ্যে এনেছে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠকে তিনটি ভিডিওকেই ‘ভাইরাল ভিডিও’ (সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট) বলে দাবি করছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মুখপাত্র কুনাল ঘোষরা। আর এই সাংবাদিক বৈঠকের পরই সোমবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের দুই বিজেপি নেতাকে আটক করে ঘাটাল থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ। আরেকজনের খোঁজে চলছে তল্লাশি।

thebengalpost.net
বিজেপি-র মন্ডল সভাপতি বিপ্লব মাল:

নবান্ন অভিযানে নাশকতার চেষ্টা করা হচ্ছে” অভিযোগে ঘাটাল মহকুমার খড়ার পৌরসভার একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলর (৪ নং ওয়ার্ডের) বাবলু গাঙ্গুলি এবং স্থানীয় বিজেপি নেতা সৌমেন চ্যাটার্জিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ্য তৃণমূল প্রকাশিত ভিডিও-তে তাঁদের দেখা গিয়েছে। তবে, চন্দ্রকোনা ২নং মণ্ডলের সভাপতি বিপ্লব মাল পলাতক। তাঁর খোঁজেও পুলিশ তল্লাশি চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এক জন পলাতক। আটক হওয়া দুই বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’ এদিকে, দুই নেতাকে আটক করে দলকে বদনাম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

thebengalpost.net
ভাইরাল ভিডিও-র একটি অংশ:

ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ এক হয়ে বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আরজি কর নিয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা সকলেই দেখেছেন। আর এখন বিজেপির দু’জনকে আটক করে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অভিযানের সঙ্গেও বিজেপি যুক্ত নয়। আর একরম কোনও ভিডিও-র সঙ্গে ঘাটালের বিজেপি নেতারা যুক্ত নয়। পুরোটাই তৃণমূল আর পুলিশের চক্রান্ত।” ‘পলাতক’ হওয়ার আগে বিপ্লব মাল নিজেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই ধরনের ভিডিও-র বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন। মেদিনীপুর শহরে বিজেপি-র জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, “লাশের রাজনীতি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করতেন। আমাদের নিজেদের চোখে দেখা, নেতাইয়ের মৃত গ্রামবাসীদের লাশ চব্বিশ ঘন্টা আটকে রেখে, পর দিন জেলা শহর মেদিনীপুরে তিনি মিছিল করেছেন। তাঁদের দলের নেতাদের মুখে এসব মানায় না! আর শুভেন্দু বাবু তো যথার্থই বলে থাকেন, কুনাল ঘোষ একটা নর্দমার কীট! বিজেপি-আরএসএস’র নাম নেওয়ার কোনও যোগ্যতাই কুনাল ঘোষের নেই।” পাল্টা মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “আমরা তো প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ বলে কোন সংগঠন এ রাজ্যে নেই। এটা আসলে আরএসএস-এর মদত পুষ্ট কিছু ছাত্রদের অশান্তি পাকানোর ছক। শান্তিপ্রিয়, ভদ্র-সভ্য বাঙালি বিজেপি-আরএসএসের এই চক্রান্তে পা দেবে না। আর, ওরা যে লাশের রাজনীতি করতে চাইছে, সেটা তো দিন কয়েক আগেই ওদের ‘সবে ধন নীলমণি’ গদ্দর নেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছিলেন! সেটাই এবার প্রকাশ্যে এলো।”

thebengalpost.net
গ্রেফতার করে আনা হচ্ছে বিজেপি-র কাউন্সিলর ও এক নেতাকে: