দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ নভেম্বর: আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মন। এবার তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হলো বিধাননগর দক্ষিণ থানায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর ব্লকের বিলমাধিয়া গ্রামের বাসিন্দা, স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা (৪৩)-কে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

thebengalpost.net
স্বপন কামিল্যা:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর সকালে কলকাতার নিউটাউনের যাত্রাগাছি বাগজোলা খালপাড় এলাকার ঝোপের মধ্য থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্বপনের বাড়ি মোহনপুরের বিলমাধিয়া এলাকায় হলেও, গত ১৫-২০ বছর ধরে কলকাতার সল্টলেকের দত্তাবাদ এলাকায় একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে তিনি সোনার ব্যবসা করতেন। স্বপনের শ্বশুরমশাই অমূল্য কামিল্যাও ওই দোকানে থাকতেন। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কয়েকদিনের জন্য তাঁরা মোহনপুরের বাড়িতে এসেছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর, সকালে কলকাতা ফিরে গিয়েছিলেন। ওই দিনই স্বপনকে তাঁর দোকান থেকে নীলবাতি লাগানো গাড়িতে করে প্রশান্ত বর্মন তুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ স্বপনের পরিবারের। ২৯ অক্টোবর ভোরে তাঁর (স্বপন কামিল্যার) রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। ৩১ অক্টোবর বিধাননগর দক্ষিণ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন স্বপনের শ্যালক দেবাশিস কামিল্যা। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) মোহনপুরের বাড়িতে স্বপনের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বপনের স্ত্রী মমতা কামিল্যা সহ পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সকলেরই অভিযোগ স্বপনকে খুন করেছেন প্রশান্ত বর্মন নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে বিডিও বলে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং স্বপনের খোঁজে সুদূর জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থেকে মোহনপুরের বাড়িতে এসেছিলেন। একই কথা জানিয়েছেন মোহনপুরের বিলমাধিয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য গৌরাঙ্গ দে-ও।

thebengalpost.net
স্বপনের বাড়িতে হাহাকার:

পরিবারের অভিযোগ, গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা নাগাদ নীলবাতি লাগানো গাড়িতে করে স্বপনের খোঁজে (প্রশান্ত) মোহনপুরের বিলমাধিয়া গ্রামে এসেছিলেন প্রশান্ত। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গিয়েছে স্বপনের পরিবার সূত্রে। তবে, ওই সময় বাড়িতে স্বপনকে না পেয়ে কলকাতায় ফিরে যান প্রশান্ত। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিনকয়েক আগে প্রশান্তর রাজগঞ্জের বাড়ি থেকে বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার চুরি হয়। সেই চুরি যাওয়া সোনা সল্টলেকের দত্তাবাদ এলাকায় স্বপনের দোকানে বিক্রি করা হয় বলে প্রশান্ত জানতে পারেন। ওই দিন স্বপনকে না পেয়ে প্রশান্ত ফিরে যান। পরের দিনই অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর স্বপনকে তাঁর দোকান থেকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। বিধাননগর দক্ষিণ থানা খুন, অপহরণ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতায়। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখানে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।” তবে, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য গৌরাঙ্গ দে-র দাবি, “ওই বিডিও প্রশান্ত বর্মন-ই স্বপনকে নৃশংসভাবে খুন করেছে।ন।” প্রশান্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন মোহনপুরবাসী। উল্লেখ্য যে, বিতর্কিও এই বিডিও-র বিরুদ্ধে শূন্য পেয়েও WBCS অফিসার হওয়া থেকে শুরু করে নানা অভিযোগ রয়েছে। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশান্ত বর্মন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার বাড়িতে কোন চুরি হয়নি। এই নামে আমি কাউকে চিনিনা।”

thebengalpost.net
মোহনপুরের গ্রামে প্রশান্ত বর্মন:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):