দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ২ জুন:ফের একবার দেশে মোদী-ঝড় শুধু সময়ের অপেক্ষা! শনিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় দেশের প্রায় সবকটি সংস্থার বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোলে (Exit Poll) তেমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ‘চারশো পার’ না হলেও, সাড়ে তিনশোর বেশি আসন নিয়ে NDA জোটই যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে; তা জানাচ্ছে এবিপি-সি ভোটার থেকে ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস কিংবা টুডেজ চানক্য- সকলেই। উত্তর প্রদেশ থেকে অরুণাচল প্রদেশ, গুজরাত থেকে কর্ণাটক, বাংলা থেকে আসাম- সর্বত্রই যে রাম-আবেগের চোরা স্রোতে বিরোধী নৌকো ডুবতে চলেছে, ইঙ্গিত মিলেছে এক্সিট পোল থেকে। আর, সেই সমীক্ষা যে অনেকটাই মিলতে চলেছে, রবিবার (২ জুন) দুপুরে অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভার ফলাফল দেখে অনুমান করাই যায়!

thebengalpost.net
ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক:

৬০ আসনের অরুণাচল বিধানসভায় ৪৬টি আসনে জয়ী হতে চলেছে বিজেপি বা এনডিএ জোট (দুপুর অবধি পাওয়া ফলাফলে অনুযায়ী)। গতবার (২০১৯) সংখ্যাটা ছিল ৪১। ২০১৯- এ কংগ্রেস ৪টি আসনে জিতলেও, এবার মাত্র ১টি আসনে এগিয়ে আছে তারা। ফলে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম- দেশে এবারও গেরুয়া ঝড় বা মোদি ঝড় অক্ষুন্ন থাকবে বলেই রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মত। সমালোচকদের মতে, হিন্দু-হৃদয়ে রাম-আবেগ থেকে বিরোধী জোটে মোদীজির ‘বিকল্প’ কোনও বিশ্বাসযোগ্য মুখের অভাবেই মূলত ডুবতে চলেছে ইন্ডিয়া-জোট। মূল্যবৃদ্ধি, কৃষক বিদ্রোহ, বেকারত্ব, বিভিন্ন এজেন্সির অতি-সক্রিয়তা, ইলেক্টোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ডের বিতর্ক- প্রভৃতি ইস্যুগুলিকে কাজে লাগিয়ে মোদীর আত্মনির্ভর ভারত, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, বিদেশ নীতি, বন্দেভারত বা ‘ভারতমালা’র এক্সপ্রেসওয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো ‘মুখ’ যে এখনও ভূ-ভারতে খুঁজে পায়নি বিরোধীরা, তা বলাই বাহুল্য! তার সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে হিন্দুদের রাম-মন্দির আবেগ। সর্বোপরি, বিখ্যাত অর্থনীতিবি ড. মনমোহন সিংহের বিকল্প যে রাহুল গান্ধী বা মল্লিকার্জুন খাড়গে কোনোমতেই হতে পারেন না; তা হয়তো দেশবাসী উপলব্ধি করেছেন।

শুধু তাই নয়, নরেন্দ্র মোদীর ‘না খায়ুঙ্গা না খানে দুঙ্গা’ স্লোগান ভারতবাসীর মনে যেভাবে দাগ কেটেছে; তার বিকল্প হিসেবে রাহুল-মমতা-তেজস্বী-অখিলেশ-দের যে দেশবাসী কোনোভাবেই গ্রহণ করতে পারেননি, তাও একপ্রকার নিশ্চিত হতে চলেছে। যদিও, বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিতে বাংলায় বিজেপি-কে যেভাবে ২০ থেকে ২৭টি আসন দেওয়া হয়েছে; তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মমতা-অভিষেক। গণনার আগে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দিতেই যে মোদি মিডিয়া এমনটা করেছেন, তা জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি থেকে অভিষেক ব্যানার্জি সকলেই। মমতা জানিয়েছেন, “এসব ফেক। যা দেখানো হচ্ছে, আমরা তার দ্বিগুণ আসন পাব! দেশেও ইন্ডিয়া জোট ভালো ফল করবে। এসব মোদি-মিডিয়ার চক্রান্ত!” যদিও, গতকাল (১ জুন) ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে যাননি মমতা বা তাঁর কোনো প্রতিনিধি। তবে, কি তিনি ‘জল’ মাপছেন নাকি বামেদের অভিযোগ অনুযায়ী মোদীর সঙ্গে ‘সেটিং’ করে চলেছেন? মমতার দাবি, “প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক, জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। যদি, সিপিএম নাক না গলায়! আমার খারাপ লাগে, ইন্ডিয়ায় সবই ঠিকঠাক চলছে, ঠিকই আছে। আমি ওদের সমর্থনও দিয়েছি। কিন্তু, সিপিএম ওদের মনিটরিং করে। সিপিএম কেন ওদের মুখপাত্র হবে? আমার এই জায়গায় প্রশ্ন আছে।” এমন অনেক ‘প্রশ্ন’ আছে দেশবাসীর মনেও, উত্তর মিলতে চলেছে ৪ জুন (মঙ্গলবার)!

thebengalpost.net
ফের একবার মোদী ঝড়?