দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ৮ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড়ে আরও ‘শক্তিক্ষয়’ হল বিজেপির। সোমবার বড়সড় ভাঙন হল তৃণমূলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা’র নেতৃত্বে। আদিবাসী মোর্চার ১০ জন নেতা সহ প্রায় ৪৫০ কর্মী পদ্ম-মায়া ত্যাগ করে ঘাসফুল শিবিরে এলেন! উল্লেখ্য যে, ২০১৮’র পর থেকেই এই এলাকায় ব্যাপক শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছিল বিজেপি’র। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী প্রায় ৯ হাজার ভোটে লিড পেয়েছিলেন নারায়ণগড় থেকে। রাজ্যে তৃণমূলের বিশাল জয়ের মধ্যেও, নারায়ণগড়ে বিজেপি প্রার্থী হেরেছিলেন মাত্র ৩ হাজার ভোটে! সৌজন্যে ছিল এই এলাকার অধিকাংশ আদিবাসী ও জনজাতি ভোট নিজেদের পকেটে রাখা! সেই আদিবাসী মোর্চার নেতারাই এবার পদ্ম-মায়া ত্যাগ করে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করলেন চার শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে। এর আগেও নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্টের হাত ধরে নারায়ণগড়ে বিজেপির ভাঙন হয়েছে! ফলে এই এলাকায় বিজেপির অস্তিত্ব ধীরে ধীরে বিলীন হতে চলল! সেই কথাই বললেন শাসকদলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। মঙ্গলবার সকালে তিনি বললেন, “এই তো সবে শুরু! শুধু নারায়ণগড় নয়, আগামীদিনে এই জেলাতেই বিজেপির অস্তিত্ব বলে কিছু থাকবে না।”

thebengalpost.net
বিজেপিতে বড়সড় ভাঙন :

প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে নারায়ণগড়গড় বিধানসভার ৬ নং অঞ্চল থেকে বিজেপি’র পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার এসটি মোর্চার জেলা সহ-সভাপতি রামচন্দ্র টুডু, টিপু টুডু, রমানাথ হাঁসদা, কালীপদ বাস্কে, লক্ষ্মীকান্ত গিরি, বীরেস কোটাল সহ প্রায় ১০ জন নেতৃত্ব তৃনমূল জেলা কার্যালয়ে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা’র হাত ধরে শাসকদলে যোগদান করেন। উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা নারায়ণগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষ, নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ, তৃণমূল নেতা গণেশ মাইতি প্রমুখ। রামচন্দ্র টুডু জানান যে, তিনি প্রথমে তৃনমূলে ছিলেন। কিছু মতবিরোধের ফলে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বিজেপিতে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না! তাই তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সামিল হতেই বিজেপি ছেড়েছেন শতাধিক কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে। আর এ নিয়ে শিবির ত্যাগ করা বিজেপি নেতা কর্মীদের কটাক্ষ করে জেলা বিজেপি’র সহ সভাপতি অরূপ দাস মন্তব্য করেছেন, “বিধানসভার আগে দলে অনেক বেনোজল প্রবেশ করে গিয়েছিল, কিছু বেরিয়ে যাওয়ায় বিজেপিই শক্তিশালী হবে।” তিনি যোগ করেন, “অনেককেই আবার মামলা দিয়ে কিংবা মামলার ভয় দেখিয়ে যোগদান করানো হচ্ছে। আসলে নারায়ণগড় সহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও সমাজবিরোধীদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দাপট দেখানোর চেষ্টা করছে। তাই, তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে বলছি, পুলিশি ক্ষমতার অপপ্রয়োগ না করে আর নারায়ণগড়ে সমাজবিরোধীদের তান্ডব বন্ধ করে, ক্ষমতা দেখান! বুঝে যাবেন ওই এলাকায় বিজেপির শিরদাঁড়ায় কতখানি জোর।” অরূপের দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেছেন, “মানুষ তো তৃণমূলের সঙ্গেই আছে, সারা রাজ্য তা জানে! বিজেপি নেতৃত্বকে বলব, আমরা যদি দরজা পুরোপুরি খুলে দিই, বিজেপি দলটাই থাকবেনা। আগামীদিনে আরও বড় চমক অপেক্ষা করছে জেলায়!”

thebengalpost.net
৪৫০ বিজেপি নেতা কর্মীর তৃণমূলে যোগদান :