thebengalpost.in
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সম্ভাব্য দুই জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ ও অজিত মাইতি এক ফ্রেমে (সোমবার দলের জেলা পার্টি অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে) :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুলাই: ২০২৪ এর লোকসভার লড়াইয়ের আগে খোলনলচে বদলে ফেলা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাঠামো। দলের রাজ্য যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’কে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সায়নী ঘোষ’কে রাজ্য যুব সভাপতি করার মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক রদবদলের ভিত্তি প্রস্তর আগেই স্থাপন করা হয়েছে। রাজ্য কমিটির রদবদলও নির্বাচনী ফলাফলের পরই সম্পন্ন করা হয়েছে। অনেক নতুন ও তরতাজা মুখ’কে স্থান দেওয়া হয়েছে। এবার সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে, জেলার সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে! সবকিছুই স্থির হয়ে গেছে, শুধু ঘোষণা টুকুই বাকি। চলতি সপ্তাহে অথবা আগামী সপ্তাহে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ক্রমে তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা সুব্রত বক্সী ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে আলোচনা করে সাংগঠনিক রদবদলে চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়াও প্রায় হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ যে বদলটি হচ্ছে তা হল- লোকসভা আসন অনুযায়ী জেলা কমিটি তৈরি করা হবে অর্থাৎ একটি জেলাতে এবার একটিই জেলা কমিটি নয়, সর্বাধিক ২ টি সাংগঠনিক জেলার ভিত্তিতে ২ টি জেলা কমিটি তৈরি করা হবে, বেশ‌ কিছু জেলাতে। সেই তালিকায় আছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নামও। ঘাটাল ও মেদিনীপুর দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের নিরিখে ২ টি জেলা কমিটি, ২ টি যুব কমিটি তৈরি হতে চলেছে।‌ খুব সম্ভবত চলতি সপ্তাহেই তা ঘোষণা করে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে।

thebengalpost.in
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সম্ভাব্য দুই জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ ও অজিত মাইতি এক ফ্রেমে (মাঝখানে দীনেন রায়ের ডানদিকে, সোমবার দলের জেলা পার্টি অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে) :

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যে ২ টি জেলা কমিটি ও যুব কমিটি গঠিত হতে চলেছে, তার সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে কয়েকটি নাম জানা গেছে বিভিন্ন সূত্র থেকে। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হতে চলেছেন দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া নেতা তথা বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে যে নামগুলি ছিল, সুজয় হাজরা, শৈবাল গিরি, সূর্য অট্ট, প্রদ্যোৎ ঘোষ প্রমুখ। তবে, শেষ পর্যন্ত দলনেত্রী নির্মল’কেই বেছে নিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বাকিদেরও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হিসেবে অজিত মাইতি’র মনোনয়ন অনেকটাই নিষ্কণ্টক হতে চলেছে বলে জানা গেছে। যদিও, ঘোষণা এখনও বাকি, তা সত্বেও সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এমনটাই হতে চলেছে বলে দলেরই বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস মিলেছে।

thebengalpost.in
নির্মল ঘোষের সাথে সাথে লড়াইয়ে ছিলেন প্রদ্যোত ঘোষ ও সুজয় হাজরাও :

পরিবর্তন হতে চলেছে দলের জেলা যুব সংগঠনেও। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি হিসেবেও অনেকের মধ্যে‌ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বর্তমান যুব সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী’র সঙ্গে সঙ্গে প্রদীপ সরকার, নির্মাল্য চক্রবর্তী, সন্দীপ সিংহ, সৌরভ বসু প্রভৃতি নানা নাম আলোচনায় উঠে এসেছিল। তবে, প্রথম দু’জন এবং শেষের জনকে দলের মূল সংগঠনের (অর্থাৎ, মাদার সংগঠনে) ক্ষেত্রেই এবার দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। মূল লড়াই ছিল নির্মাল্য’র সঙ্গে সন্দীপের। বিভিন্ন কারণেই শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ’কে বেছে নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, তাঁর বিরুদ্ধে দলের একাংশ শুভেন্দু ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ জানালেও, সেসব এখন “অতীত” বলে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও যুব সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলের অভিজ্ঞ নেতারা ছাড়াও পিকে’র টিম ও বর্তমান বিধায়ক জুন মালিয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ঘাটালের যুব সভাপতি হিসেবে (সম্ভবত) বেছে নেওয়া হচ্ছে দলের ছাত্র সংগঠনের বর্তমান জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী’কে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পরিবর্তন হতে চলেছে দলের মহিলা সংগঠন,‌‌ শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে সমস্ত শাখা সংগঠনেই। অপরদিকে, দলের সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে এবার থেকে ‘তারুণ্য’কে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও,‌ দলে “এক ব্যক্তি এক পদ” সিস্টেম এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন : বদলে যাচ্ছে তৃণমূলের জেলা সংগঠন, বদলাচ্ছে অনেক সমীকরণ….