দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ অক্টোবর: সেই পরিচিত সাইরেন, সেই স্বল্প খরচে নিশ্চিন্ত যাত্রার ব্যস্ততা! প্রায় ৬ মাস পর গড়াল লোকাল ট্রেনের চাকা। খুশি যাত্রী সাধারণ। তবে, রবিবার সকালের দিকে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের স্টেশন চত্বর ফাঁকাই ছিল। এর অন্যতম কারণ অবশ্য আজ দিনটা রবিবার বলেই। অন্যদিকে, প্রথম দিন বলেই হয়তো স্টেশন চত্বরে দেখা যায়নি রেল পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষীদের নজরদারি কিংবা কোভিড সুরক্ষা বিধির কড়াকড়ি! সবটাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের ব্যক্তিগত সচেতনতার উপর। তবে, বেশিরভাগ যাত্রীদেরই দেখা গেল, মাস্ক পরে স্টেশনে প্রবেশ করছেন বা ট্রেনে উঠছেন। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা দেবব্রত বিশ্বাসের মতো অনেকেই আবার চাইছেন, “কোভিড সুরক্ষা বিধির বিষয়ে আরেকটু কড়াকড়ি হোক রেল কর্তৃপক্ষ। আজকে তো তেমনভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের দেখাই গেল না! হয়তো প্রথম দিন বলেই।” দেবব্রত মেদিনীপুর স্টেশন থেকে ৬ টা ১৫’র লোকালে হাওড়া রওনা দিলেন। মেদিনীপুর থেকে হাওড়া যাওয়ার এটাই এখন প্রথম লোকাল। তবে, খড়্গপুর থেকে হাওড়া অবধি যাওয়ার প্রথম ট্রেন ভোর ৩ টা ৫ এ। এরপর, খড়্গপুর থেকেই ৫ টা ২৫ এ আছে দ্বিতীয় ট্রেন। এদিন, প্রায় একই দৃশ্য চোখে পড়েছে খড়্গপুর স্টেশনেও। তবে, মেদিনীপুর স্টেশনের তুলনায় বরাবরের মতোই খড়্গপুরে ভিড় ছিল বেশি। দূরত্ব বিধি কোনও স্টেশনেই মানা হয়নি। লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হলে তা যে মানা সম্ভব নয়, সম্প্রতি স্বীকার করে নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষও। একইসঙ্গে, ‘৫০ শতাংশ যাত্রী’ নিয়ে লোকাল চালানোর বিধিও যে মানা সম্ভব নয়, পরোক্ষে তাও মেনে নিয়েছেন রেল আধিকারিকরা।
এদিকে, ঊর্ধ্বমুখী পেট্রোল-ডিজেলের দামে সড়ক পথে যাতায়াতের খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা। খড়্গপুর স্টেশনে বসে তা স্বীকার করে নিলেন যুবক রাকেশ সিংহ। বললেন, “ব্যবসার কাজে প্রায়ই পাঁশকুড়া, মেছেদা ও হাওড়া যেতে হয়। বাইকে যাওয়ার খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাসে যাওয়ারও অনেক সমস্যা। লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় আমার মত সাধারণ যুবক-যুবতী, ছাত্র-ছাত্রী ও শ্রমজীবী মানুষের অনেক উপকার হবে। আশা করছি ধীরে ধীরে লোকাল ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে।” এদিকে, মেদিনীপুর থেকে হাওড়া অবধি ডাউন লাইনে মোট ৬ টি ট্রেন চলছে। প্রথম ট্রেন ৬ টা ১৫ ও শেষ ট্রেন বিকেল ৫ টা ৫৫। খড়্গপুর থেকে হাওড়া অবধি চলছে আরও ৩ টি লোকাল। ভোর ৩ টা ৫, সকাল ৫ টা ২৫ ও সকাল ৭ টা ৪৫। অন্যদিকে, হাওড়া থেকে মেদিনীপুর আসার আপ লাইনে চলছে ৭ টি লোকাল। প্রথম ট্রেনটি হাওড়ায় ছাড়বে রাত্রি ২ টা ৪৫। হাওড়া থেকে মেদিনীপুর আসার শেষ লোকাল সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ এ ছাড়বে। হাওড়া থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত আরও ২ টি লোকাল চলবে। ভোর ৩ টা ৩০ এবং বিকেল ৪ টা ২৫- এ যথাক্রমে ছাড়ব হাওড়া স্টেশন থেকে।