দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ সেপ্টেম্বর: এযেন সেই ছোটবেলার চোর-পুলিশ খেলা! সামনে দৌড়চ্ছেন খোদ বিডিও। আর তাঁকে ধরার জন্য পেছনে ছুটছেন এলাকার মহিলারা। মঙ্গলবার বারবেলার ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়। এলাকার মহিলাদের দাবি, “রাস্তার কারণে গ্রামে ঢুকতে পারেনা অ্যাম্বুল্যান্স। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছেনা। গ্রামে ডাক্তার আসতেও ভয় পাচ্ছে। ফলে বাড়িতেই মৃত্যু হচ্ছে রোগীর!” আর এমনই অভিযোগ তুলে এবং অবিলম্বে এলাকার রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মঙ্গলবার ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে বিডিও সহ প্রশাসনের আধিকারিকদের তালাবন্দী করে বিক্ষোভ দেখালেন নারায়ণগড়ের নারমা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কানাইসাগর গ্রামের মহিলারা। পরে কোনভাবে তালা-মুক্ত হয়েই নিজের গাড়ির দিকে দৌড় লাগান বিডিও কৌশিক প্রামাণিক। তাঁর পিছু নেন বিক্ষোভকারী মহিলারাও। তাঁদের অভিযোগ, বিডিও কেন তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই পালিয়ে গেলেন? সবমিলিয়ে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নারায়ণগড়ের নারমা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাগুরিয়া এলাকায় অনুষ্ঠিত ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শিবিরে।

thebengalpost.net
তালাবন্দী বিডিও:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ মাগুরিয়া এলাকার কৃষি ও কৃষক কল্যাণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘আমাদের পাড়া…’ শিবিরে পৌঁছন বিডিও কৌশিক প্রামাণিক, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শতরূপা মাইতি নায়েক সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। এরপরই স্থানীয় কানাইসাগর গ্রাম থেকে দলে দলে পৌঁছন মহিলারা। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘রাস্তা হয়নি কেন? জবাব চাই জবাব দাও।’ প্ল্যাকার্ড হাতে প্রথমে পথ অবরোধ করার পর শিবিরে উপস্থিত বিডিও সহ আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের তালাবন্দী করে দেন কানাইসাগর গ্রামের মহিলারা। পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কোনমতে তাঁরা বিডিও-কে সেখান থেকে বের করতে সক্ষম হন। এরপরই বিডিও দৌড়ে নিজের গাড়িতে উঠতে গেলে মহিলারাও তাঁর পিছু নেন। মঙ্গলবার দুপুরে জমজমাট এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মাগুরিয়াতে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শতরূপা মাইতি নায়েকের দাবি, “এটা পুরোপুরি বিজেপি-র চক্রান্ত।” বিজেপি নেতা রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “এলাকার মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। বেহাল রাস্তা না সারানোর জনরোষ! বিজেপি এর সাথে যুক্ত নয়।” কানাইসাগর গ্রামের অপর্ণা মান্না, মানসী মাইতি, রেবা গিরি প্রমুখ মহিলা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল রাস্তা। রোগীরা বাড়িতেই মারা যাচ্ছে। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছেনা। বিডিও কথা শোনেননি বলেই, তাঁকে তালাবন্দী করতে হয়েছিল।” ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। বিডিও কৌশিক প্রামাণিক বলেন, “রাস্তা নিয়ে ওঁদের একটি দাবি ছিল। হঠাৎ করেই এসে তালাবন্দী করেন। রাস্তা সংস্কারের বিষয়টি অবশ্যই দেখব।” তবে, ছুটে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।

thebengalpost.net
রাস্তা অবরোধ মহিলাদের: