শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুলাই: ‘বিপদতারিনী’র দিনই পর পর বিপদের খবর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। ভোররাতে কেশপুরের পঞ্চমীতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন সহ মোট ৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, সাত সকালেই ডেবরা-তে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে একই পরিবারের ৩ জনের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ! ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল ডেবরা ব্লকের চক রাধাবল্লভ গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে ডেবরা ব্লকের চক রাধাবল্লভ গ্রামে একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখা চোলাই মদের সরঞ্জাম আনতে নামে সুজন সরেন নামে বছর ১৫-র এক নাবালক। বেশ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও ওই কিশোর উঠে না আসায়, ষাটোর্ধ্ব বদ্রীনাথ হেমব্রম তাঁকে উদ্ধার করতে নামেন। এরপর তিনিও ট্যাঙ্ক থেকে উঠে না আসায়, বাপি বাস্কে নামে এক যুবক ট্যাঙ্কে প্রবেশ করে। পর পর ৩ জন ওই সেপটিক ট্যাঙ্কে প্রবেশ করলেও, শেষ পর্যন্ত কেউই উপরে উঠে আসতে পারেন নি! ঘটনায় মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ওই এলাকায়।
এরপর, ডেবরা থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ পৌঁছে স্থানীয়দের তৎপরতায় দ্রুত তাঁদের তিন জনকেই উদ্ধার করে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতরা হলেন যথাক্রমে সুজন সরেন (১৫), বদ্রীনাথ হেমব্রম (৬০) এবং বাপি বাস্কে (৪৫)। সুজনের বাড়ি শ্রীরামপুরে। বাকি দু’জনের বাড়ি চক রাধাবল্লভ গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই পরিবার চোলাই মদের করবার করত। বাড়ির পাশেই একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে চোলাই মদের সরঞ্জাম লুকোনো ছিল। প্রথমে মদের সরঞ্জাম আনতে নেমেছিল এক কিশোর। এরপর একে একে আরও দুই ব্যাক্তি নামে। ৩ জনেরই মৃত্যু হয়। প্রাথমিক অনুমান, সেফটিক ট্যাঙ্কে বিষাক্ত (মিথেন বা ওই জাতীয়) কোনও গ্যাসের প্রভাবে তিনজনেরই মৃত্যু হয়! ইতিমধ্যেই, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করে ডেবরা থানার পুলিশ। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই এলাকায়! আবগারি দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “খবর পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”