Recruitment

SSC Scam: চাকরি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টি খেল SSC! রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারিত হতে চলেছে এপ্রিল-মে’তেই

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ৩০ মার্চ: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ‘বেআইনি’ ভাবে নিয়োগ হওয়া যে সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিলে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করছে স্কুল সার্ভিস কমিশন; সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তাঁদেরই চাকরি-বাতিল মামলায় উল্টো সুরে গান গাইছেন কমিশনের আইনজীবী। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের শুনানিতে কমিশনের আইনজীবী জানাচ্ছেন, “সিবিআই আমাদের যে OMR গুলি দিচ্ছেন, আমরা তা খতিয়ে দেখেই; বিকৃত ওএমআর (OMR) বা কারচুপি করা ওএমআর (OMR)-এর তালিকা প্রকাশ করছি।” ফলে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু’র নির্দেশই বহাল রাখছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু, এই কমিশনই আবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সামনে উল্টো সুরে গাইছেন বলে অভিযোগ চাকরি প্রার্থীদের একাংশের। সম্প্রতি, বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও তা প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার যেমন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চে, চাকরি হারানো শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একটি মামলায় কমিশনের (SSC) আইনজীবী জানান, ওই OMR সঠিক কিনা তা আমরা জানিনা। আদালত (কলকাতা হাইকোর্ট) যেমন নির্দেশ দিচ্ছেন, আমরা তেমন করতে বাধ্য হচ্ছি! উদ্ধার হওয়া OMR সঠিক কিনা তা সিবিআই (CBI) বলতে পারবে।

হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর ভাগ্য নির্ধারিত হতে পারে এপ্রিল মাসেই:

শুধু যোগ্য চাকরিপ্রার্থী বা মামলাকারীরাই নয়; চাকরি হারানো মামলাকারীরাও স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই দ্বিচারিতায় ক্ষুব্ধ! একদিকে, তাঁরা চাকরি হারিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনছেন। অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশন যেভাবে দুই কোর্টে দুই ধরনের বক্তব্য পেশ করছে, তাতে নানা দুশ্চিন্তার মধ্যেও তাঁরা প্রবল ক্ষুব্ধ। তাঁদের মধ্যে একাংশের অভিযোগ, “বেছে বেছে কেন আমাদের কয়েকজনের OMR-ই বিকৃত করা হল? কারা বিকৃত করল? আমরা নিজেরা তো আর করতে যাইনি। আর, ওই ওএমআর (OMR) যে আমাদেরই তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু, হাইকোর্টে কমিশন জানাচ্ছে, ওগুলো আমাদেরই! অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টে উল্টো সুর গেয়ে বলছেন, ওই বিষয়ে সিবিআই বলতে পারবে। কমিশন আগে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক।” এদিকে, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই এর আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তাই, বাকি সব পক্ষের আইনজীবীদের আবেদন মেনে, আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে সিবিআই-কে এই তদন্ত সম্পর্কিত বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও সুধাংশু ধুলিয়া’র ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১২ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি বলেও জানানো হয়েছে। বিস্তারিত শুনানির আশ্বাসও দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি। তবে, দু’জনই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, “দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি হলে, চাকরি যাবেই।” আইনজীবীদের মত, এপ্রিল মাসের মধ্যেই চাকরি হারানো প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চূড়ান্ত ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে, পুরো প্যানেলের ভবিষ্যতও নির্ভর করতে পারে সিবিআই রিপোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর।

বিজ্ঞাপন (Advertisement):

ঠিক একইভাবে, প্রাথমিকের ২০১৪ টেট থেকে ২০১৬-‘১৭ সালে নিয়োগ হওয়া ৪২,৫০০ এবং ২০২০-‘২১ সালে নিয়োগ হওয়া ১৬,৫০০ (আদতে ১২,৫০০) শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎও এপ্রিল-মে’র মধ্যেই নির্ধারিত হতে চলেছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে ৪২,৫০০ শিক্ষক‌ নিয়োগের মামলার চূড়ান্ত শুনানি হতে চলেছে ৪-৬ এপ্রিল। তারপরই, সব পক্ষের বক্তব্য শুনে তিনি চূড়ান্ত রায় দিতে পারেন। প্যানেলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সেই রায়ের উপর। যদিও, রায় পছন্দ না হলে শিক্ষকদের একাংশ যাবেন প্রথমে ডিভিশন বেঞ্চ এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে। অন্যদিকে, ইতিমধ্যে ১৬,৫০০ নিয়োগের সিবিআই-ইডি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তী শুনানি হতে পারে ১৫ মে। যেহেতু দু’টি মামলারই (২০১৬ ও ২০২০ নিয়োগের) বিষয়বস্তু প্রায় একই রকম (নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগের পুরো দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া); সেক্ষেত্রে, মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের উপরই যে নির্ভর করবে প্রায় ৫৯ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ, তা বলাই বাহুল্য! উল্লেখ্য যে, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৪২,৫০০ নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মন্তব্য করেছেন, “সমস্যা হচ্ছে, সব নিয়োগ খারিজ করলে বৈধ ভাবে চাকরি পাওয়া কিছু ব্যক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এক জনও বৈধ প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আদালতের তা ভালো লাগবে না।” তিনি এও বলেন, “অন্য কিছু পদ্ধতি বার করার কথা ভাবছি। আমি তাঁদের কথা ভাবছি, যে পরিবারে এক জনের আয়ে সংসার চলে!”

চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ভর করবে সুপ্রিম নির্দেশের উপরই :

News Desk

Recent Posts

Midnapore: এবার শিক্ষা দপ্তরে বদলির নির্দেশিকা, পশ্চিম মেদিনীপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগে নতুন DI হচ্ছেন অমিত রায়

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ নভেম্বর: এবার শিক্ষা দপ্তরের একঝাঁক আধিকারিকের বদলির নির্দেশিকা…

5 days ago

SP Transfer: পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি হচ্ছেন পলাশচন্দ্র ঢালি, পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে জল্পনা

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ নভেম্বর: SIR আবহের মাঝেই রাজ্যের প্রায় ১০টি জেলার…

5 days ago

Medinipur: খড়্গপুর টাউন থানার আইসি হচ্ছেন পার্থসারথি পাল; বদলি হলেন কেশিয়াড়ি, মোহনপুর, গোয়ালতোড় থানার IC-রাও

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ নভেম্বর: রাজ্যজুড়ে ১৭৫ জন ইন্সপেক্টরকে বদলি করা হলো।…

6 days ago

Midnapore: মেয়ের অন্নপ্রাশন শেষে জ্বর নিয়েই কাজে যোগ দিয়েছিলেন, ‘কফিনবন্দী’ হয়ে ডেবরায় ফিরলেন CRPF জওয়ান

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ নভেম্বর: শোকসংবাদটা পৌঁছেছিল শুক্রবারই। বুকে পাথর চেপে অপেক্ষা…

1 week ago

Medinipur: মামিমার সাথে ‘অভিসারে’ গিয়ে ফাঁসলেন যুবক? অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে কেশিয়াড়িতে গ্রেপ্তার ‘কলির কেষ্ট’

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ নভেম্বর: মামিমাকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবক।…

1 week ago

Medinipur: প্রায় ৬০ বছর পর রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রীর গড়ে ‘পাকা’ হবে মাটির স্কুলবাড়ি, আনন্দে মিষ্টিমুখ পড়ুয়াদের

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়ার 'খাসতালুক' সবংয়ে…

2 weeks ago