দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ সেপ্টেম্বর: জঙ্গলমহলবাসীর প্রিয় হাতি রামলাল। খাবারের খোঁজে এদিক-ওদিক হানা দেয় ঠিকই, তবে শান্ত-নিরীহ এই দলবিচ্ছিন্ন দাঁতাল (লোনার হাতি)-টি সচরাচর মানুষকে আক্রমণ করেনা। বুধবার সাতসকালেই সেই রামলালের দাদাগিরি দেখলেন জঙ্গলমহলবাসী। এদিন সকাল ৯টা নাগাদ মেদিনীপুর বনবিভাগের পিড়াকাটা রেঞ্জের রঞ্জা বিটের অধীন শালবনি ব্লকের ঘাঘরাশোল এলাকায় একটি চারচাকা (ইকো) গাড়ি উল্টে দেয় রামলাল। তবে, চালক আগেই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়াতে বড়সড় কোন বিপদ ঘটেনি।

thebengalpost.net
গাড়ি উল্টে দিল রামলাল:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, ঘাঘরাশোল এলাকায় রামলাল ছাড়াও আরও ১৫-২০টি হাতি আছে। এলাকাবাসীদের আগেই সতর্ক করা হয়েছে জঙ্গলপথ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। তা সত্ত্বেও ওই ইকোগাড়িটি মাহাতপুর থেকে লালগেড়িয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল জঙ্গলের ভিতরের রাস্তা দিয়ে। ঘাঘরাশোল এলাকায় হঠাৎই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে প্রথমে পথ আটকে দাঁড়ায় রামলাল। সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান চালক। এরপরই ফাঁকা গাড়িতে খাবারের খোঁজে তল্লাশি চালায় এই পূর্ণবয়স্ক সুবিশাল দাঁতালটি। খাবার না পেয়েই রাগে সে গাড়ি উল্টে দেয়। তবে, গাড়িতে কেউ না থাকায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলে দাবি বনদপ্তরের। পিড়াকাটার রেঞ্জ অফিসার শুভজিৎ দাস বলেন, “সাধারণ মানুষকে বারবার জঙ্গলপথ এড়িয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। মাহাতপুর থেকে জয়পুর, সিজুয়া রাজ্য সড়ক ধরেও লালগেড়িয়া যাওয়া যায়। কিন্তু, দূরত্ব কমানোর জন্য জঙ্গলপথ ধরেই যাচ্ছিল গাড়িটি। যতদূর খোঁজ নিয়েছি, গাড়িতে চালক একাই ছিলেন। রামলালকে দেখেই উনি গাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু, ওই এলাকায় আরও হাতি আছে। ফলে বিপদ হতেই পারত! বনদপ্তরের সতর্কবার্তা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি সাধারণ মানুষকে।” অন্যদিকে, বুধবার ভোরে মেদিনীপুর বনবিভাগের চাঁদড়া রেঞ্জের গুড়গুড়িপাল বিটের অধীন মেদিনীপুর গ্রামীণ এলাকায় ধানের ক্ষেতে তাণ্ডব চালায় ১০টি হাতির একটি দল। সকালে ওই হাতির দলটি পলাশিয়ার রাস্তা পেরিয়ে শুকনাখালির জঙ্গলে প্রবেশ করেছে। মেদিনীপুর বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন, “এই সময় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। বনকর্মীরা বিভিন্ন রাস্তাতে প্রহরাতে আছে। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। হাতিকে উত্যক্ত করা চলবে না। আর ফসলের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বনদপ্তর দেখবে।”