দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন: ২০২০’র আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে, করোনার প্রথম ঢেউ যখন নিম্নমুখী হয়েছিল, দেশ জুড়ে চলছিল “আনলক পর্ব”, সেই সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং অভিভাবক-অভিভাবিকাদের সমর্থন ও পরামর্শ নিয়ে, সরকারি নির্দেশের অপেক্ষা না করেই কোভিড বিধি মেনে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল খুলে বিতর্কে জড়িয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-১ ব্লকের হাট সরবেড়িয়া বি সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়। রাজ্য জুড়েই এ নিয়ে প্রশংসা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল! খবর পৌঁছে গিয়েছিল শিক্ষা দপ্তরের কাছেও। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তড়িঘড়ি শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে যেন স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়! মাত্র ১ দিনই ক্লাস হয়েছিল, ১৩ ই আগস্ট সেই স্কুল ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভাবলেও, সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে, ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ পরিচালন কমিটিকে। দুঃখে কেঁদে ফেলেছিলেন প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক! আবারও নজির সৃষ্টি করে, ফের শিরোনামে এলো বৃন্দাবন বাবু’র প্রাণের চেয়ে প্রিয় হাট সরবেড়িয়া বি সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদের জন্য অক্সিজেন পার্লার ও ওষুধ সরবরাহ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হল এই স্কুলে। সোমবার এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভূঁইয়া, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, দাসপুর ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুনীল ভৌমিক সহ এলাকার বিডিও, জয়েন্ট বিডিও প্রমুখ।
দাসপুর এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের যোগান নেই। যে সমস্ত রোগীরা অক্সিজেন ও ওষুধ নিয়ে বাড়িতেই থাকতে পারবেন, তাঁদেরকে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে! তাঁদের কথা ভেবেই এই অক্সিজেন পার্লারের উদ্বোধন বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এই উদ্যোগে সরবেড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেড মাস্টার্স এন্ড হেড মিস্ট্রেস এবং মুক্তি নামে একটি সংস্থা। হাট সরবেড়িয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক জানালেন, “অক্সিজেন পার্লারের প্রধান উদ্দেশ্য গ্রামীণ এলাকায় প্রত্যন্ত প্রান্তে যাতে কোন করণা রোগী অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ সংশয় না হয়। শুধু অক্সিজেন নয় করোনা রোগীদের বিনা পয়সায় ওষুধ দেওয়া হবে। যাদের রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাবে সেই সব রোগীদের স্থিতিশীল করাও অক্সিজেন পার্লার খোলার অন্যতম উদ্দেশ্য।” বিদ্যালয় ও সংস্থার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, বিধায়ক মমতা ভূঁইয়া এবং প্রাক্তন শিক্ষক ও কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র।