দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুন: কার্যত লকডাউনে অসহায় পরিবারগুলি আরও সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে! প্রথম ঢেউয়ের মতোই ফের অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলিকে একপ্রকার নিষ্পেষিত করে দিয়েছে! প্রশাসনের সাথে সাথে সাধ্যমতো পাশে দাঁড়াচ্ছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে সহৃদয় মানুষজনেরা। এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে, কিছুটা প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত নজরগঞ্জের বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন (উচ্চ মাধ্যমিক) এর শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ এবার এগিয়ে এলেন এলাকার অসহায় পরিবারগুলি তথা ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ অভিভাবক-অভিভাবিকাদের পাশে দাঁড়াতে। নিজেদের বেতনের একটা অংশ দান করে শুক্রবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শতাধিক অসহায় ও দুঃস্থ মানুষ, মূলত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক-অভিভাবিকাদের হাতে দিনকয়েক চলার মতো, অন্তত ১০ রকমের খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হলো।

thebengalpost.in
বিদ্যালয়ের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা অতিমারীর প্রথম পর্বেও বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ নিজেদের বেতন থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে দান করেছিলেন। আর, এবার লকডাউন পর্বে নজরগঞ্জ, কামারপাড়া, মালিয়াড়া, কালগাঙ প্রভৃতি দারিদ্র্য ও শ্রমজীবী অধ্যুষিত এলাকার কাজ হারানো অভিভাবক -অভিভাবিকাদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার বার্তা দিলেন। উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি নির্মলেন্দু দে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিন্টু সামন্ত সহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা। লকডাউন পর্বে এই ধরনের কাজকে এলাকার লোকজন এক কথায় কুর্নিশ জানিয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিন্টু সামন্ত বলেন “আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রীই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের বাবা-মা তথা অভিভাবক-অভিভাবিকারা দিনমজুরি বা লোকের বাড়িতে কাজ করে দিনযাপন করেন এবং ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন। অতিমারী এবং কার্যত লকডাউন পরিস্থিতিতে তাঁদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন বা আয় কমে গেছে। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে সেরকমই শতাধিক অভিভাবক -অভিভাবিকারদের কিছু সাহায্য করার চেষ্টা করলাম। আর এই কাজে আমরা আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের। তারাই মূলত এই অসহায় মানুষগুলির তালিকা তৈরি করেছিলো।” আগামী দিনে বিদ্যালয়ে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে বলেও প্রধান শিক্ষক জানান।

thebengalpost.in
অসহায় অভিভাবক-অভিভাবিকাদের পাশে বিদ্যালয় :