thebengalpost.net
দক্ষিণা কালীর মন্দির :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ৫ নভেম্বর: অষ্টাদশ শতকের কুখ্যাত মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত এই মন্দিরে আত্মগোপন করেছিলেন! পরবর্তী সময়ে, ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে এই দক্ষিণা কালীর মন্দিরে পুজো দিয়ে যেতেন। সেই থেকেই এই মন্দির ডাকাত কালীর মন্দির হিসেবে প্রসিদ্ধ। প্রতি বছর ধুমধাম করে কালীপুজো হয়। এই বছর কোভিডের কারণে কিছু বিধিনিষেধ মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুরের মালঞ্চের দক্ষিণা কালী মন্দিরের পুজো। প্রায় আড়াইশ বছরের প্রাচীন এই কালীমন্দির। এলাকায় প্রসিদ্ধি ডাকাত কালীর মন্দির হিসেবে। ১৭৭২ সালে গোবিন্দরাম রায় এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। চার চালার মন্দির। মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজও রয়েছে। মায়ের মুখশ্রী মোম দিয়ে তৈরি। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রায় বংশের আসল বাড়ি ছিল খড়্গপুর গ্রামীণের জকপুরে। জঙ্গলাকীর্ণ মালঞ্চের ওই অংশের প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের পাশেই ছিল জমিদারদের আরেকটি বাড়ি। গোবিন্দরাম রায়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে কালীগতি রায় পূজোর কাজ দেখাশোনা করতেন। কালীগতি ছিলেন নিঃসন্তান। তিনি মারা যাওয়ার পর, মন্দিরের পুজো হলেও রক্ষনাবেক্ষণের খরচ চালানোর উৎসাহ ছিল না কারোও। বর্তমানে, একটি ট্রাস্ট করা হয়েছে।

thebengalpost.net
দক্ষিণা কালীর মন্দির :

গোবিন্দরাম রায়ের জ্ঞাতি সুভাষ বোস বলেন, তখনকার দিনের জমিদার গোবিন্দরাম রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ডাকাত কালী নামে পরিচিত হলেও, এই মা আসলে দক্ষিণা কালী। এই মন্দিরের একটা ইতিহাস আছে। মারাঠা দস্যু, ভাস্কর পণ্ডিতের নাম আমরা অনেকেই শুনেছি। সেই ভাস্কর পণ্ডিত এই মন্দিরে আত্মগোপন করে থাকতেন। তখনকার মালঞ্চ আর এখনকার মালঞ্চ’র মধ্যে অনেক পার্থক্য। এই মালঞ্চ সেই সময় জঙ্গলে ভর্তি ছিল। হিংস্র জীবজন্তু এই জঙ্গলে থাকতো। ভাস্কর পণ্ডিত আত্মগোপন করার জন্য এই মন্দির বেছে নিয়েছিলেন। কোথাও বেরোনোর আগে এখানে পুজো দিয়ে বের হতেন। সেই থেকেই ডাকাত কালী। এখনো কিছু মানুষ ডাকাত কালী বলে ডাকে। মন্দিরের পুরোহিত সৌমেন্দ্র চক্রবর্তী বললেন, কালীপুজোর দিন তন্ত্র সাধনা মতে পূজা হয়। বাদবাকি দিন বৈষ্ণব মতে যেমন পুজো হয়। যখন মন্দির তৈরি হয়েছিল তখন কোন তন্ত্রসাধক দ্বারা পঞ্চমুন্ডির আসন তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা সন্ধ্যা ধাড়া বলেন, “ডাকাত কালী হিসেবে এর পরিচিতি। যারা ডাকাতি করতেন তাঁরা এখানে পুজো দিয়ে যেতেন। আমরাও এই মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যাই। বহু বছরের পুরানো মন্দির। মা খুব জাগ্রত, মনস্কামনা পূরণ হয়।”

thebengalpost.net
মন্দিরে টেরাকোটার কাজ :

thebengalpost.net
ডাকাত কালী :