দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ জুলাই : মেদিনীমাতার বীর সন্তান পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আজকের এই পুণ্য দিনেই অমরত্ব লাভ করেছিলেন। আজ (২৯ জুলাই) তাঁর ১৩১ তম তিরোধান দিবস। আর, নিজের মহানুভবতায়, আজকের এই দিনটিকে সার্থক করে তুললেন মেদিনীপুরেরই সন্তান, পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ ওঝা। প্রাতঃস্মরণীয় পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসের প্রাক্কালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ি থানার বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের জন্য তিনি জমি দান করলেন। গতকাল (বুধবার, ২৮ জুলাই) সন্ধ্যায়, নিজের বাড়িতে ১৬ ডেসিমেল জমির দানপত্রের আইনি কাজ সম্পন্ন করলেন বিদ্যাসাগরের স্মৃতিধন্য মেদিনীপুরের এই শিক্ষক। খড়্গপুর সাব রেজিস্ট্রারের এক আধিকারিক এসে এই কাজ সম্পন্ন করেন। বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অখিলবন্ধু মহাপাত্রকে দানপত্র করেন হরিপদবাবু।
উল্লেখ্য যে, ১৯৫৬ সালে বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। হরিপদ ওঝার বাবা স্বর্গীয় পীতাম্বর ওঝা সেই সময় বিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য ২১ ডেসিমেল জমি দান করেছিলেন। বিদ্যালয় গড়ে উঠলেও পর্যাপ্ত খেলার জায়গা ছিল না। এই বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় সুন্দরাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ ওঝা’র। একসময় তিনিও বনচাটুল গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে তিনি বেলদার কলেজরোড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। তাঁর দুই পুত্র ও দুই কন্যা। দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে হরিপদবাবু এবং তাঁর সহধর্মিণী শয্যাশায়ী। এই পরিস্থিতিতেও বাবার আদর্শকে অনুসরণ করে হরিপদ বাবু কয়েকদিন আগেই লিখিতভাবে বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র’কে দান করা জমি গ্রহণের আবেদন করেন। বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক সেই আবেদনে সম্মতি দেন। দানপত্র রেজিষ্ট্রি র খরচ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই বহন করার সিদ্ধান্ত নেন। গত ২৭ শে জুলাই খড়্গপুরস্থিত সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে দানপত্রের দলিল দাখিল করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র। গতকাল অর্থাৎ ২৮ শে জুলাই সন্ধ্যায় সাব-রেজিষ্ট্রারের প্রতিনিধি, আধিকারিকের উপস্থিতিতে হরিপদ বাবু-র বেলদাস্থিত বাসভবনে বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ১৬ ডেসিমেল জমি (দাগ নং ১৭৯, জে. এল নং ১৯০) দানপত্রের আইনত কাজ সম্পন্ন হয়। জমি দান করে হরিপদবাবু বলেন, “বনচাটুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কচিকাঁচাদের খেলার মাঠের এবার ব্যবস্থা হবে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অখিলবন্ধুবাবু কাজের মানুষ। স্কুলকে তিনি ভালোবাসেন। তাঁর হতে এই দানপত্র করে আমি খুশি। আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হল।”
হরিপদবাবুর এই অবদানের কথা স্মরণ করে, বৃহস্পতিবার তাঁর বাসভবনে গিয়ে বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র, মাণিক দাস ও দিব্যেন্দু দাস তাঁকে সংবর্ধিত করেন। হরিপদবাবুর হাতে একটি সচিত্র মানপত্র, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি, পবিত্র “গীতা” তুলে দেওয়া হয়। শিক্ষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র বলেন, “২০১৬ সালে বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী উৎসবের পর ধীরে ধীরে বিদ্যালয়ের অগ্রগতি হচ্ছে। হরিপদবাবুর এই জমি দান আজ সকলের কাছে উদাহরণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে হরিপদবাবু এবং তাঁর বাবার ভূমিকা আমরা চিরদিন মনে রাখব। বিদ্যাসাগরের মহাপ্রয়াণ দিবসের প্রাক্কালে একটি বিদ্যালয়ের কাছে এ এক চরম প্রাপ্তি! পণ্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর যেমন শিক্ষার উন্নয়নে সর্বস্ব দান করতেন, আজ রোগ শয্যায় থেকে হরিপদবাবু’ও একই কাজ করলেন। তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর ভাষা নেই।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ সেপ্টেম্বর: শিক্ষা, সাহিত্য, সঙ্গীত ও সমাজজীবনে উল্লেখযোগ্য অবদানের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর: গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ সেপ্টেম্বর: ফের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার আইআইটি খড়্গপুরে! শনিবার…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ সেপ্টেম্বর: 'কেউ কথা রাখেনি..!' না রাজ্য সরকার না…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৯ সেপ্টেম্বর: গত কয়েক বছরে সবুজায়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে ভারত।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর: বিশাল জায়গার উপর প্রাসাদোপম বাড়ি। উঁচু পাঁচিল…