দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ নভেম্বর: মর্মান্তিক বললেও কম বলা হয়! মাত্র ১৭ বছরের কিশোর মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতেই বাবাকে ফোন করে ডাকল। গভীর রাতে ছেলের অস্ফুট আর্তনাদ শুনে ছুটে গেলেন বাবা, জানালা ভেঙে ছেলের কাছে পৌঁছলেনও। কিন্তু, চোখের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখলেন ছেলেকে। দু’দুটো লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই সব শেষ! বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করলেন ১৭ বছরের কিশোর আকাশ তিরিয়া-কে! মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার নহপাড় গ্রামে। সোমবার গভীর রাতের এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া! এখনও যেন ঘোর কাটেনি আকাশের বাবা কানাইলাল তিরিয়ার! মা মূর্ছা যাচ্ছেন বারবার।
জানা গেছে, নেকুড়সেনি বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন (উচ্চ মাধ্যমিক) এর দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আকাশ তিরিয়া (১৭) সোমবার রাত্রি সাড়ে ন’টা নাগাদ ভাত খায় আর পাঁচটা দিনের মতোই। এরপর, রাত্রি দশটা নাগাদ দুধ খেয়ে দোতলায় নিজের রুমে চলে যায়। বাবা-মা থাকেন একতলায়। বাবা কানাইলাল তিরিয়া জানান, “খাওয়া-দাওয়ার পর রাতে একবার শৌচাগারে গিয়েছিল সম্ভবত মলত্যাগ করতে। আমরা জলের শব্দ পেয়েছিলাম। তবে, কিছু বলেনি বা অসুস্থতার বিষয়ে কিছু বুঝতে পারিনি। হঠাৎ রাত্রি সাড়ে বারোটা নাগাদ ফোন আসে, কিন্তু কোনো কথা শুনতে পাইনি! গোঙানির একটা আওয়াজ বুঝতে পেরেই ছুটে গিয়ে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকি। দেখি আমাকে ফোন লাগানো অবস্থাতেই পড়ে আছে মোবাইল, সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে! কোনো কথা বলতে পারছিলনা। শরীর শক্ত হয়ে যাচ্ছিল। আমি প্রথমেই বাড়ির পাশের ডাক্তারবাবুর কাছে নিয়ে যাই। উনি বলেন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু, দু’টো লেভেল ক্রসিংয়েই আধঘন্টা সময় চলে যায়। বুঝতে পারি, তখনই সব শেষ হয়ে গেছে! হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।” অস্বাভাবিক এই মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে খড়্গপুরে। তবে, চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, গ্যাস বা অ্যাসিডিটি থেকে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে। সারা গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া!