মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ডিসেম্বর: প্রশাসনিক পদ সামলানোর কর্মশালা (Workshop)। পোশাকি নাম- “Go for Administrative Leadership”। লক্ষ্য, ছাত্র-ছাত্রীদের সিভিল সার্ভিস (UPSC, WBCS) পরীক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার এই কর্মশালার উদ্বোধন করলেন উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার এবং প্রাক্তন আইপিএস চম্পক ভট্টাচার্য। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক, যথাক্রমে- সুদীপ সরকার, তুষার সিংলা, কুহুক ভূষণ, কেম্পা হোন্নাইয়া, মহকুমাশাসক (ঘাটাল) সুমন বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন যথাক্রমে অধ্যাপক সত্যজিৎ সাহা (বিজ্ঞান) ও অধ্যাপক তপন কুমার দে (কলা ও বাণিজ্য) এবং রেজিস্ট্রার ড. জয়ন্ত কুমার নন্দী। কর্মশালায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সিভিল সার্ভিসের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার প্রমুখরা। এদিন, তাঁদের সাথে সরাসরি কথোপকথনের সুযোগ পেয়ে খুশি ছাত্র-ছাত্রীরাও।

thebengalpost.net
উদ্বোধন :

thebengalpost.net
কর্মশালা :

উল্লেখ্য যে, বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সিভিল সার্ভিসের প্রতি আগ্রহ এবং সাফল্যের পরিমাণ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশ কম। এদিনের কর্মশালায় সেই বিশেষ দিকটির প্রতি আলোকপাত করে জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল তাঁর আকর্ষণীয় বক্তৃতায় এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় মেতে ওঠেন। প্রথমদিকে আড়ষ্ট থাকলেও, ধীরে ধীরে ছাত্র-ছাত্রীরা জেলাশাসকের প্রশ্নের উত্তরে জানান, “আমাদের অভিভাবকরা এ নিয়ে একেবারেই উৎসাহিত নয়! তাঁরা শিক্ষকতা বা অধ্যাপনা নিয়েই বেশ আগ্রহী। আর তার সঙ্গে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কথা বলেন”। জেলাশাসক ছাত্র-ছাত্রীদের পরামর্শ দেন, “সিদ্ধান্ত তোমাদেরই নিতে হবে। আগ্রহী তোমাদেরই হয়ে উঠতে হবে। তবেই, প্রশাসনিক পদ সামলানোর দক্ষতা অর্জন করতে পারবে”। পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ‘মিথ’ বা ‘অজুহাত’ দূরে সরিয়ে রাখার পরামর্শ দেন। টাকা পয়সা, কোন‌ মিডিয়াম (বাংলা বা ইংরেজী বা হিন্দি), কোচিং (প্রশিক্ষণ) এসব কোন কিছুই বাধা হতে পারেনা বলে তিনি জানান। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

thebengalpost.net
জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল :

thebengalpost.net
পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার :

প্রাক্তন আইপিএস চম্পক ভট্টাচার্য গুরুত্ব দেন শৃঙ্খলার উপর। অন্যদিকে, দেশের প্রথম একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন আইএএস (IAS) তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সমাজকল্যাণ) কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, “জীবনের সবজায়গায় কাঠিন্য, জীবনের প্রতিমুহূর্তে বাধা! আমি যদি এত প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মহীশূরের এক সাধারণ যুবক থেকে মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক হতে পারি, তাহলে তোমরাও পারবে”। বস্তুত, অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া-ই যে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এক জ্বলন্ত অনুপ্রেরণা, তা বলাই বাহুল্য! বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু বলেন, “প্রথাগত পড়াশোনার বাইরেও ছাত্র-ছাত্রীদের পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সিভিল সার্ভিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় পেশার প্রতি আগ্রহী করার জন্যই, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল স্বয়ং এই আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মশালার আয়োজন করেছে এবং ধারাবাহিকভাবে সিভিল সার্ভিসের এই কোচিং বা কোর্স (প্রশিক্ষণ) চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।”

thebengalpost.net
অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া :

thebengalpost.net
সরাসরি কথোপকথনে ছাত্র-ছাত্রীরা :