দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ অক্টোবর: আশ্বিনের শেষ বেলাতেও ফের একবার রাজ্যজুড়ে দুর্ভোগ-জলযন্ত্রণা। নিম্নচাপের নির্মম অত্যাচার যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা! আর, মধ্য বঙ্গোপসাগরের উত্তর অংশে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপের প্রভাবে প্রায় গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে শনিবার থেকে যে একটানা বর্ষণ শুরু হয়েছে, তা আরও দু’দিন ভোগাতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের জন্য। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে দু’টি নিম্নচাপ রয়েছে। পাশাপাশি, পূবালি হাওয়ার দাপট বাংলা ও বাংলাদেশ উপকূলে রয়েছে। যার জেরে দক্ষিণ-পূর্ব বাতাসের মাধ্যমে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে রাজ্যে। এর প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে আরও দু’, দিন। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবার বিকেলের পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। মঙ্গলবার থেকে এই জেলা দুটিতে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, দুই চব্বিশ পরগণা, হাওড়া ও দুই দিনাজপুর জেলায় আগামীকালও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, আগামীকাল, মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ও বুধবার (২০ অক্টোবর) উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
বৃষ্টি ভেজা দীঘা (ছবি- দীঘা ফেসবুক পেজ) :

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ (১৮ অক্টোবর) দক্ষিণবঙ্গের যে জেলাগুলিতে ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে, সেগুলি হল- পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও দুই চব্বিশ পরগণা। ‘হলুদ সর্তকতা’ জারি করা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে। আগামীকাল, ১৯ অক্টোবর ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে- পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও দুই চব্বিশ পরগণা এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। ২০ অক্টোবর বুধবার ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।

thebengalpost.net
সতর্কতা :

এদিকে, একটানা বর্ষণে দুর্ভোগ ও জলযন্ত্রণা’র ছবি উঠে এসেছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। ঘুরতে গিয়েও ঘরবন্দী দীঘার পর্যটকরা। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা রাতভর প্রবল বর্ষণে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকেও চলছে একঘেঁয়ে বৃষ্টি। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের পক্ষেই ফের একবার ভোগান্তি সৃষ্টি হল! ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এমনিতেই ‘আগুন বাজার’ লক্ষ্মী পুজোর আগে যেন বিস্ফোরণের মুখোমুখি হতে চললো! মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তদের পক্ষে সবজিতে হাত লাগানোই যেন দায় হতে চলেছে। অন্যদিকে, অবিশ্রান্ত বর্ষণে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ নগর (৮ নং ওয়ার্ড) এবং পালবাড়ি, চাষিপাড়া প্রভৃতি এলাকায় ফের একবার জলযন্ত্রণার সৃষ্টি হয়েছে। জলের তলায় চলে গেছে, খড়্গপুরের ২ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইন্দার আনন্দনগর এলাকা। এছাড়াও, ভবানীপুর, আয়মা, ঝুলি, ঝাপেটাপুর, মালঞ্চ, রামকৃষ্ণ পল্লী প্রভৃতি নীচু এলাকাগুলির পরিস্থিতিও ভালো নয়। নিকাশি নালা’র অভাব থাকাকেই দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। তবে, নাগাড়ে বৃষ্টি হলেও, বৃষ্টি’র পরিমাণ কম হওয়ায় বেশিরভাগ এলাকা এখনও অবধি ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে!

thebengalpost.net
জলমগ্ন খড়্গপুর ও মেদিনীপুরের কিছু এলাকা :