দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুলাই: ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, পেশিতে টান, মাথা ধরা সহ সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা আর সঙ্গে পেট খারাপ। মোটামুটি এই খবর-ই আসছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে। খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুর, ঘাটাল থেকে পিংলা, গড়বেতা- সর্বত্রই বেড়েছে জ্বর সহ এই ধরনের ভাইরাল ফিভারের উপসর্গ। মেদিনীপুর শহরের প্রতিটি ডাক্তারের চেম্বার এই ধরনের রোগের ভিড়। অনেকেই করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন বা করাচ্ছেন। বেশিরভাগ-ই অবশ্য তার প্রয়োজন বোধ করছেন না! আসলে, তৃতীয় ঢেউ থেকেই করোনা’র উপসর্গ আর ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ভাইরাল ফিভারের উপসর্গ প্রায় একই রকম হয়ে গেছে। তাই, এই মুহূর্তে সব থেকে বড় সমস্যা হলো, করোনা না সাধারণ মরশুমি জ্বর- তা বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। তাই, সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক আর প্যারাসিটামল দিয়েই অনেকে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন! তবে, তা যে একেবারেই সমীচীন নয়, তা জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতেই, শুক্রবার (৮ জুলাই)- এর রিপোর্ট অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) জেলায় মোট করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে ১০২ জনের! তবে, মৃত্যু’র খবর নেই। গোটা দেশ ও রাজ্য জুড়েই সংক্রমণ বাড়লেও, মৃত্যুর হার একেবারেই কম- এটুকুই স্বস্তি দেওয়ার মত খবর। তবে, পুনরায় মাস্ক ব্যবহার সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে স্বাস্থ্য দপ্তর।

thebengalpost.net
সাবধানে রাখতে হবে শিশুদের (প্রতীকী ছবি) :

উল্লেখ্য যে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত ১০২ জনের মধ্যে ৬১ জন-ই খড়্গপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকার। এর মধ্যে, IIT Kharagpur ক্যাম্পাসের প্রায় ২০ জন। এছাড়াও, রেল সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। মেদিনীপুর শহরের ১৮ জন ও গ্রামীণের ৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, গড়বেতা, বেলদা, ডেবরা, পিংলা, শালবনী- প্রভৃতি এলাকায় ১-২ জন করে সংক্রামিতের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঘাটাল মহকুমায় বেশ কয়েকজন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আইআইটি খড়্গপুর ছাড়াও, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও একাধিক জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে, প্রায় সকলেই জ্বর সহ উপরোক্ত সাধারণ উপসর্গগুলিতেই আক্রান্ত। মারাত্মক কোনো উপসর্গের হদিশ এখনও মেলেনি; তা সত্ত্বেও, চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে- ১. শিশু ও বয়স্কদের এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই অবিলম্বে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে। ২. কো-মর্বিডিটি থাকলে সতর্ক থাকতে হবে এবং উপসর্গ দেখা দিলে টেস্ট করাতে হবে। ৩. চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে, অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা উচিত হবেনা। ৪. আগস্ট নাগাদ সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছতে পারে, তার আগেই সকলকে সচেতন হতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ৫. ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পূর্ণ করতে হবে।