দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম, ১৩ এপ্রিল: বৃহস্পতিবার ছিল জঙ্গলমহলের দ্বিতীয় শিকার উৎসব। আজ অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির ঠিক আগের দিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রতিবছরের মতো এবারও শিকার উৎসবের দিন নির্ধারণ করেছিলেন। আজ (১৩ এপ্রিল) শিকার উৎসব ছিল মেদিনীপুর বনবিভাগের লালগড় রেঞ্জের অধীন পাখিবাঁধ ও ভাউদি (লালগড় সংলগ্ন) এলাকায়। তবে, শেষ পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের পুলিশ প্রশাসন এবং মেদিনীপুর বনবিভাগের চূড়ান্ত তৎপরতায় রীতিমতো ম্লান হয়েছে এদিনের শিকার উৎসব! বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা অবধি একটিও বন্যপ্রাণী শিকারের খবর পায়নি বনদপ্তর ও পুলিশ। এজন্য, মেদিনীপুর বনবিভাগের তরফে বনকর্মীদের সাথে সাথেই পুলিশ ও প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবার খোদ কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ উদ্যোগে এবং গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির তৎপরতায় গত এক-দু’মাস ধরেই বন্যপ্রাণী হত্যার বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হচ্ছিল পুলিশ-প্রশাসন ও বনদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে। একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতৃত্বদের সঙ্গে। ফলে, গত ৪ এপ্রিল মেদিনীপুর রেঞ্জের গোপগড় সংলগ্ন জামশোলে অনুষ্ঠিত মরশুমের প্রথম শিকার উৎসবেও সাফল্য পেয়েছিল বনদপ্তর। হাতেগোনা মাত্র ১-২ টি বন্যপ্রাণী হত্যার খবর পাওয়া গিয়েছিল সেবার। তবে, তার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। এবার, লালগড় রেঞ্জের পাখিবাঁধ ও ভাউদি শিকার উৎসবেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়েছে বনদপ্তর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ, পুলিশ ও বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যেখানে অন্যান্য বছর অন্তত দেড় থেকে দু’হাজার শিকারিরা উপস্থিত হয়, সেখানে এবার মাত্র দেড়শো-দু’শো শিকারির দেখা মিলেছে। একটিও বন্যপ্রাণী হত্যার খবর পাওয়া যায়নি। তবে, শেষ মুহূর্তে পশুপ্রেমী সংগঠন বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে শিকারীদের বাদানুবাদে লালগড় সংলগ্ন ওই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানা যায়। যদিও, শেষমেশ পুলিশ ও বনদপ্তরের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।