শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ জানুয়ারি: একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা প্রকল্পে তার অ্যাকাউন্টেও ঢুকেছিল ট্যাব (Tab) কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা। তবে, বাড়িতে একটি স্মার্টফোন (মোবাইল) থাকায় মা বলেছিলেন, এখনই কেনার প্রয়োজন নেই! এ নিয়েই মায়ের সাথে মেয়ের কথা-কাটাকাটি হয় বলে জানা যায়। ‘জেদি’ মেয়েকে মা বকুনি দেন বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এরপরই, বাড়ির লোকেদের অনুপস্থিতে আত্মঘাতী হয় একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী! বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা ব্লকের ১০ নং জলচক অঞ্চলের গোকুলচক এলাকায়।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গোকুলচক গ্রামের বাসিন্দা, একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী তনুশ্রী সামন্তও মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ট্যাবের টাকা পেয়েছিল। আর সেই ট্যাবের টাকা পাওয়ার পর মায়ের কাছে সে আবদার করেছিল মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য। কিন্তু, মা তাকে বলে আপাতত সে বাড়ির স্মার্টফোন বা মোবাইলটিই ব্যবহার করতে পারে; পরে নতুন ফোন কিনে দেবে। এ নিয়েই মায়ের সাথে অশান্তি হয় তনুশ্রী-র। এরপর মা বাড়ির কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। বাড়ির অন্যান্যরাও নিজেদের কাজে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তনুশ্রী-কে ডাকেন তার মা। কিন্তু, কয়েকবার ডাকাডাকির পরও মেয়ের সাড়া মেলেনি! এরপরই, বাড়ির ভেতরে তনুশ্রী-র রুমের দরজা খুলে দেখেতে পান, মেয়ে ওপর থেকে ঝুলছে! মায়ের চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই তনুশ্রী-কে নামিয়ে স্থানীয় চিকিৎসককে ডেকে আনেন। তবে, চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করেন! প্রতিবেশীরা জানান, তনুশ্রী পড়োশোনায় মেধাবী ছিল। কিন্তু, একটু জেদি বা একরোখা ছিল। সেজন্যই মায়ের সামান্য বকুনি সহ্য করতে না পেরে সে এমন সিদ্ধান্ত নেয়! রবিবার তনুশ্রী-র দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় পুলিশের তরফে। এদিকে, মেধাবী মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া! ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।