দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ সেপ্টেম্বর: ফের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার আইআইটি খড়্গপুরে! শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ বি.আর আম্বেদকর হল থেকে এক গবেষক-পড়ুয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর টাউন থানার অধীন হিজলি ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত পড়ুয়ার নাম হর্ষ কুমার পান্ডে (২৭)। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক আধিকারিক। আইআইটি খড়্গপুরের তরফেও ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ডিরেক্টর অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী। এদিকে, চলতি বছরই ৬ জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো আইআইটি খড়্গপুরে। এর মধ্যে পাঁচ জনের ক্ষেত্রেই ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হলো।

thebengalpost.net
হর্ষকুমার পান্ডে:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

গত ১৮ জুলাই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তথা কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা ঋতম মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এরপর, গত ২১ জুলাই রাতে গলায় ওষুধ আটকে মৃত্যু হয় মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা তথা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চন্দ্রদীপ পাওয়ারের। শনিবার ফের এক গবেষকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হলো তাঁর নিজের রুম থেকে। পুলিশ ও আইআইটি সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বারিয়াতু থানা এলাকার বাসিন্দা হর্ষকুমার পান্ডে ২০২৪ সালে এলাহাবাদের মতিলাল নেহেরু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এম.টেক করার পর, ২০২৫ সালে আইআইটি খড়্গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিএইচডি (গবেষণা) করার জন্য ভর্তি হন। তাঁর বাবার নাম ড. মনোজকুমার পান্ডে। এদিন দুপুরে বাবা ছেলেকে ফোনে না পাওয়ায়, আইআইটি খড়গপুরের নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করেন। তাঁরা গিয়ে দেখেন, হর্ষের রুম লাগানো। এরপরই হিজলি পুলিশকে খবর দেয় আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। তারপরই বেলা ২টো নাগাদ দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় আইআইটি খড়্গপুরের বিসি রায় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আজ, রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্রে। করা হবে ভিডিওগ্রাফি।

উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ২৩ জুন দায়িত্ব নেওয়ার পরই পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী। সেতু অ্যাপ, মাদার ক্যাম্পাস সহ মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় স্বয়ং ডিরেক্টর নিয়মিত একটি করে হল (হোস্টেল) ভিজিট করতেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে পড়ুয়াদের সঙ্গে মশাল মিছিলে পাও মেলান তিনি। তা সত্ত্বেও আবারও সেই একই ঘটনা। জুলাই মাসে মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে পর পর দুই পড়ুয়ার (ঋতম মণ্ডল ও চন্দ্রদীপ পাওয়ার) অস্বাভাবিক মৃত্যুর আগে, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি শাওন মালিক (ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তথা কলকাতার বাসিন্দা), ২০ এপ্রিল অনিকেত ওয়ালকার (ওশেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নোভাল আর্কিটেকচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তথা মহারাষ্ট্রের রামনগর থানার বাসিন্দা), ৪ মে মহম্মদ আসিফ কামার (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তথা বিহারের শিওহর জেলার বাসিন্দা)-এর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।