thebengalpost.in
আদালতে তোলা হচ্ছে অভিযুক্তদের :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, বাঁকুড়া, ১৮ জুলাই : শিশু পাচার কাণ্ডে বাঁকুড়ার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপাল) এবং এক শিক্ষিকা সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া ছাড়াও পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই বিদ্যালয়েরই শিক্ষিকা সুষমা শর্মাকে। ধৃত আট জনের মধ্যে মোট তিন জন মহিলা। অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল সহ সাত অভিযুক্তের ২৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত ও শিক্ষিকার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বাঁকুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ময়ূখ মুখার্জি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের স্টিল প্ল্যান্ট মেন গেট এলাকা থেকে সাত দিন আগে ন’মাসের একটি শিশুকে নিয়ে আসা হয়েছিল। ওই শিশুটিকে সুষমার কাছে কমলকুমার বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন সুষমা নিঃসন্তান। এ ছাড়াও কমলকুমারের বাড়িতেও কয়েকটি শিশু ছিল। সব মিলিয়ে মোট পাঁচ শিশুকে উদ্ধার হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ৫ জনই শিশুকন্যা বলে জানা গেছে! মনে করা হচ্ছে, দুর্গাপুরের স্টিল প্ল্যান্ট মেন গেট সংলগ্ন কাদা রোডের নিষিদ্ধপল্লি থেকে শিশুদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনে এনে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে তা বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল ওই অধ্যক্ষের। কমলকুমার আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। রাজস্থানেও তাঁর শিশু পাচারের পরিকল্পনা ছিল বলে মনে হচ্ছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে এক চায়ের দোকানিও। তিনি ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে লিঙ্কম্যান হিসাবে কাজ করতেন বলে মনে করা হচ্ছে।

thebengalpost.in
আদালতে তোলা হচ্ছে অভিযুক্তদের :

ঘটনার সূত্রপাত, রবিবার দুপুরে। অভিযোগ, স্কুল লাগোয়া বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জাতীয় সড়কের উপর একটি মারুতি ভ্যানে দু’টি শিশুকে জোর করে তোলার চেষ্টা করছিলেন কমলকুমার। সে সময় ওই ভ্যানের ভিতর বসেছিলেন দুই মহিলা। তাঁদের সঙ্গে গাড়ির মধ্যে বসেছিল আরও দু’টি শিশু। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় কালপাথর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুব্রত সাহানা চিৎকার করতে শুরু করেন। তাঁর চিৎকারে স্থানীয় বেশ কিছু মানুষ ছুটে আসেন। তা দেখে পালিয়ে যান অধ্যক্ষ। স্থানীয়রা গাড়ির ভেতর থাকা দুই মহিলা ও মোট চার শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তাঁদের অসংলগ্ন কথায় সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। খবর পেয়ে সেখানে আসে পুলিশ। অধ্যক্ষকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলে জাতীয় সড়ক কিছু ক্ষণের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। এরপর একে একে এই ঘটনায় জড়িত মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে, উদ্ধার হওয়া ৫ শিশুকন্যা’র মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্রে। কোনও রকম যৌন নির্যাতন করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করার জন্যই মেডিক্যাল চেক-আপ করানো হচ্ছে। আদতে ওই অধ্যক্ষ সহ অভিযুক্তরা শিশু গুলিকে কোথায় পাচার করতে চেয়েছিলেন (নিঃসন্তান দম্পতি বা নাকি কোনো যৌন পল্লী), তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ। সেজন্যই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ওই অধ্যক্ষ সহ ৭ জনকে। শিক্ষিকার অবশ্য ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ গ্রেফতার হওয়ায় আসরে নেমেছে তৃণমূল! ওই অধ্যক্ষের সঙ্গে বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের ছবি প্রকাশ করে সমালোচনা করেছে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও, এই বিষয়ে বিজেপির বক্তব্য, “তদন্ত তদন্তের পথে চলবে। দেবাঞ্জনের সঙ্গেও তো অনেক তৃণমূল নেতার ছবি দেখা গেছে!”