দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ২৪ মে: ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের আবহেই ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ (Remal) এ লন্ডভন্ড হতে পারে দুই বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ) সমুদ্র উপকূল! রবিবার মধ্যরাতে ১৩৫ কিমি গতিবেগে এই ঘূর্নিঝড়ের সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডফল’ হতে চলেছে বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের মাঝে। সুন্দরবন সহ সংলগ্ন এলাকাতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে রবিবার মধ্যরাতে। উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালের ২৬ মে-ই উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্নিঝড় ‘ইয়স’ (Yaas)। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে ইতিমধ্যেই ঘনীভূত হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। সেই নিম্নচাপ শনিবার-ই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে (দুই চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর) শনিবার থেকেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে দুর্যোগ বাড়বে রবিবার সকাল থেকেই! মধ্যরাতে হবে ল্যান্ডফল। দীঘা সহ সমুদ্র উপকূলে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে রাজ্য সরকার।

thebengalpost.net
দীঘাতে সরকারের সতর্কবার্তা:

শুক্রবার বিকেল ৪-টার আপডেট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ক্যানিং থেকে ৭১০ কিমি দূরে অবস্থান করছে ওই নিম্নচাপ। ক্রমশ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে ওই নিম্নচাপ। যা শনিবার সকালের মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। উত্তর দিকে এগিয়ে গিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সেই গভীর নিম্নচাপ। তারপর আরও উত্তর দিকে এগিয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড়। আর, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে রবিবার মধ্যরাতে সাগরদ্বীপ এবং খেপুপাড়ার মধ্যে ল্যান্ডফল হতে পারে ‘রেমাল’ (Remal)-এর। এই ঘূর্নিঝড়ের নামকরণ করেছে ওমান। রেমালের অর্থ হল ‘বালি’। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত অবশ্য জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবারের ভোট প্রক্রিয়া তেমনভাবে ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই! যদিও, শনিবার দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই চব্বিশ পরগনার কয়েকটি জায়গায় ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওড়ার সম্ভাবনা। আগামী ২৬ মে, রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। জারি লাল সতর্কতা (Red Alert)। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা (Orange Alert)। পূর্ব বর্ধমানে ও পশ্চিম মেদিনীপুরে হবে ভারী বৃষ্টি। জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert)।

২৬ তারিখ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লেও তার প্রভাব চলবে আরও অন্তত দু দিন৷ ২৭ মে, সোমবার ভারী থেকে অতি ভারতী বৃষ্টিতে ভাসতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা৷ আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সোমবার দুই চব্বিশ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরঙ্গের মালদহও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম এবং উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে৷ হাওয়া অফিস এও জানিয়েছে, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার৷ যা ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারেও পৌঁছতে পারে৷ উত্তর চব্বিশ পরগণায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার৷ এই জেলায় হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে৷ পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি বেগে থাকতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার, যা সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে৷ কলকাতা, হাওড়া এবং নদিয়া জেলাতেও প্রবল বেগে ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে৷ মৎস্যজীবীদের মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে কৃষক এবং পর্যটকদের। এই ক’দিন দীঘা-মন্দারমণি সহ সমুদ্র উপকূলে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
ধেয়ে আসছে রেমাল: