দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেইনসে (JEE Main) সারা দেশের ২৪ জন টপারের (প্রত্যেকেরই পার্সেন্টাইল ১০০) তালিকায় এ রাজ্য থেকে জায়গা করে নিয়েছিলেন দুই কৃতী, যথাক্রমে- বর্ধমানের কাটোয়ার দেবদত্তা মাঝি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের অর্চিষ্মান নন্দী। দু’জনেরই পরবর্তী লক্ষ্য ছিল JEE অ্যাডভান্স (JEE Advance)। গত ১৮ মে এই পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল প্রকাশিত হয় আজ অর্থাৎ সোমবার (২ জুন)। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, জেইই মেইনসের পর জেইই অ্যাডভান্সেও ঈর্ষণীয় ফল করেছেন দেবদত্তা। তাঁর সর্বভারতীয় র‌্যাঙ্ক ১৬ (AIR-16)। আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) জোন থেকে প্রথম এবং সর্বভারতীয় স্তরে মহিলাদের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকার করেছেন দেবদত্তা। মোট ৩৬০-এর মধ্যে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৩১২। অপরদিকে, খড়্গপুরের অর্চিষ্মানের অল ইন্ডিয়া র‌্যাঙ্ক (AlR in Open Category) হল- ৪৭৭। ৩৬০-এর মধ্যে ২৩৬ পেয়েছেন অর্চিষ্মান।

thebengalpost.net
বাবা-মা’র সাথে অর্চিষ্মান:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

জানা গেছে, আইআইটি খড়্গপুর জোন থেকে জেইই অ্যাডভান্সে মোট ৫৩৫৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। অর্চিষ্মানের অল ইন্ডিয়া র‌্যাঙ্কিং ৪৭৭ হলেও, আইআইটি খড়্গপুর জোন থেকে প্রথম কয়েকজনের মধ্যেই তাঁর থাকার সম্ভাবনা প্রবল বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে। জেইই মেইনসে টপার হওয়া ছাড়াও গত ১৩ মে প্রকাশিত CBSE-র দ্বাদশ শ্রেণীর ফলাফলেও সর্বভারতীয় মেধাতালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছিলেন খড়্গপুর গ্রামীণের চাঙ্গুয়াল এলাকার বাসিন্দা তথা আইআইটি খড়্গপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্র অর্চিষ্মান। তার আগে ICSE (দশম) পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিলেন মেদিনীপুরের এই কৃতী সন্তান। তবে, প্রথম থেকেই অর্চিষ্মানের লক্ষ্য ছিল, দাদু (মামাতো দাদু) বঙ্কিমবিহারী মাইতির মতো আইআইটি খড়্গপুরের পড়াশোনা করা।

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

আইআইটি খড়্গপুরের ১৯৭০ সালের প্রাক্তনী বঙ্কিমবিহারী মাইতি খাকুড়দা সংলগ্ন বড়মোহনপুর হাইস্কুলের রসায়নের শিক্ষক ছিলেন। রসায়নের কঠিন ‘মারপ্যাঁচ’ ছাত্রদের তিনি শেখাতেন মজার ছলে। নাতি অর্চিষ্মানের ‘শিক্ষাগুরু’ ছিলেন এই দুঁদে রসায়নবিদ-ই। অর্চিষ্মানের বাবা ড. মিঠুন নন্দী একটি বেসরকারি ওষুধ প্রস্তকারক সংস্থার পদস্থ কর্মী। মা অনিন্দিতা মাইতি নন্দী বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। সোমবার দুপুরে তাঁরা বলেন, “জেইই অ্যাডভান্সের ফল আর একটু ভালো হবে বলে আশা করেছিলাম। তবে, এত কঠিন একটা পরীক্ষায় সারা দেশের প্রথম ৫০০ জনের মধ্যে জায়গা করে নিতে পেরেছে। আমরা খুশি।” অর্চিষ্মানের প্রথম লক্ষ্য আইআইটি খড়্গপুর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়া। আর তা নাহলে অইআইটি খড়্গপুর থেকেই এআই (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তিনি। অর্চিষ্মান বলেন, “আমার দাদু ১৯৭০ সালে আইআইটি খড়্গপুর থেকে রসায়ন নিয়ে এমএসসি পাস করেন। আমারও এক এবং একমাত্র লক্ষ্য ছিল দাদুর মতোই আইআইটি খড়্গপুরে পড়া। আশা করছি, সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হবে!” অন্যদিকে, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের কৃতী ছাত্র সাগ্নিক পাত্র জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্সে (JEE Advance) ৩৭৩ (AIR-373) র‌্যাঙ্ক করে জেলায় সম্ভাব্য প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেইনসে সাগ্নিকের র‌্যাঙ্ক ছিল ১৪৫। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছিলেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা তথা মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের এই মেধাবী ছাত্র।

thebengalpost.net
দাদুর সাথে অর্চিষ্মান: