দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২৩ অক্টোবর: ক্যাম্পাসে ফিরতে চাওয়ার তীব্র হাহাকার! সেই হাহাকার আর কর্তৃপক্ষের কান অবধি পৌঁছল কই! শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন খড়্গপুর আইআইটি (Kharagpur IIT)’র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া সার্থক বিজয়বত (Sarthak Vijaywat)। সুইসাইড নোট জুড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার এক ‘অস্ফুট আর্তনাদ’! স্মৃতিচারণ করেছেন ক্যাম্পাসে কাটানো সেই সুন্দর দিনগুলির কথা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকালে ইন্দোরের (মধ্য প্রদেশ) বাড়ি থেকে মাত্র ১৯ বছর বয়সী সার্থকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোটও। ঘটনায় শোকস্তব্ধ সার্থকের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবেরা! চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আইআইটি খড়্গপুরেও। এদিকে, এখনও ক্যাম্পাস না খোলায় কর্তৃপক্ষ-কে একহাত নিয়েছেন খড়্গপুরের বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, “আমাকে আইআইটি খড়্গপুরের একাধিক পড়ুয়া প্রতিদিন টুইট করছেন, হোয়াটসঅ্যাপ করছেন ক্যাম্পাস খোলার জন্য। কিন্তু, আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা (Director, IIT Kharagpur) এই বিষয়ে কোনও আলোচনা করতেই রাজি নন। অবিলম্বে প্রতিটি পড়ুয়াকে ভ্যাকসিন দিয়ে ক্যাম্পাস খোলা উচিত বলে আমি মনে করি।”

thebengalpost.net
সার্থক বিজয়বত (Sarthak Vijaywat) :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খড়্গপুর আইআইটি’র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী সার্থক। মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়ির বারান্দা থেকে সার্থকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়! প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বুধবার রাতে নিজেই গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে সার্থক। উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। সেখানে পারাবারিক নানা অশান্তি’র কথা এবং পড়াশোনার নানা বিষয় উল্লেখ করেছেন সার্থক। এমনকি, প্রিয় প্রতিষ্ঠানের (খড়্গপুর আইআইটি’র) ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস করা, বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করার ইচ্ছে থাকলেও, অনলাইন ক্লাসে ‘বন্দী’ থাকতে হয়েছে বলে সার্থক সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। এই ঘটনা ফের একবার নাড়িয়ে দিল বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে! জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতেই আইআইটি’র সুডেন্ট সেনেট একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে ডিন অফ সুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে হয় বলেও জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়েও দাবি জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। যদিও, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক সবুজ সঙ্কেত না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তবে, খড়্গপুরের বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় (হিরণ) অবিলম্বে পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাঁর মতে, “প্রায় ২ বছর হল প্রতিষ্ঠান বন্ধ! স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়াদের অবসাদ গ্রাস করবে। আমি বিশ্বাস করি, বেশিরভাগ পড়ুয়াদেরই ভ্যাকসিনের দু’টি অথবা অন্তত একটি ডোজ হয়ে গেছে। যাদের বাকি আছে, তাদের তা দিয়ে এবার প্রতিষ্ঠান খোলা উচিত।”

thebengalpost.net
বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় :