দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ অক্টোবর: খুন বা র‌্যাগিংয়ের তত্ত্ব উড়িয়ে পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের কথাই বললেন আইআইটি খড়্গপুরের মৃত ছাত্রের বাবা। বুধবার বিকেল ৩টে নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে আইআইটি খড়্গপুরের ইলক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মৃত ছাত্র কে. কিরণ. চন্দ্রের বাবা চন্দ্র কেথাওয়াত বলেন, “প্রজেক্ট নিয়ে খুব চাপে ছিল। সঠিক সময়ে প্রজেক্ট শেষ করতে না পারায়, একজন প্রফেসর(অধ্যাপক) চাপে রেখেছিলেন। সেটা সহ্য করতে না পেরেই সুইসাইড (আত্মহত্যা) করেছে!” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে আইআইটি খড়্গপুরের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলে (হোস্টেলে) নিজের রুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কিরণ-কে। দ্রুত আইআইটি ক্যাম্পাসে অবস্থিত বি.সি রায় টেকনোলজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তেলেঙ্গানার মেদাক জেলার তুপ্রাণ গ্রামের এই মেধাবী সন্তান! বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর মেডিক্যালের মর্গে :

বুধবার দুপুর নাগাদ আইআইটি খড়্গপুরে পৌঁছন কিরণের বাবা চন্দ্র সহ পরিজনেরা। এরপর বিকেল ৩টে নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রীতিমত ক্ষোভ ও হতাশা প্রককাশ করেন তাঁরা। মৃত পড়ুয়ার বাবা ও কাকা বলেন, “আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষের তরফে কেউই আমাদের সামনে আসেননি! তাঁরা কিছুই বলছেন না।” তাঁদের অভিযোগ, “আমরা ছেলেকে পড়াশোনা করতেই পাঠিয়েছিলাম। ওর দাদাও আইআইটি খড়্গপুরেই পড়ে। মঙ্গলবার ঘটনার আগেও কিরণের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। বলছিল একটা প্রজেক্টের কাজ নিয়ে খুব চাপে আছে। মনে হচ্ছে বিভাগের কোনো প্রফেসর এ নিয়ে চাপ দেওয়ায়, সহ্য করতে না পেরে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে!” তাঁদের দাবি, “এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওর মানসিক অবস্থা আগেই বোঝা উচিত ছিল। আমাদের সঙ্গে নিয়ে আগে থেকে কথা বললে হয়তো এমনটা হতো না!” তবে, তাঁরা খুন বা র‌্যাগিংয়ের কোনো অভিযোগ করেননি।

এই বিষয়ে আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে বুধবার দুপুর নাগাদ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ কিরণের অপর দুই রুমমেট নিজেদের পড়াশোনার কাজে রুম থেকে বেরিয়ে যান। তাঁরা সাড়ে ৮টা নাগাদ ফিরে দেখতে পান, রুম ভেতর থেকে লক করা! এরপর ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায়, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়। দরজা খুলেই সকলে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান! এরপর দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় আইআইটি খড়্গপুরের হাসপাতালে। সেখানেই রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

thebengalpost.net
ময়নাতদন্তের পথে: