দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ সেপ্টেম্বর: এক পুলিশকর্মীর স্ত্রী-র অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর টাউন থানার অন্তর্গত ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাঁজোয়াল এলাকাতে। মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। জানা যায়, ২০১৮ সালে পটাশপুরের বাসিন্দা, পেশায় দর্জি শেখ ইসমাইলের কন্যা আসমাতুন বিবির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল খড়্গপুরের সাঁজোয়াল এলাকার বাসিন্দা তথা পশ্চিমবঙ্গ আর্মড পুলিশ ফোর্সের (রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর) কনস্টেবল শেখ বাবুলের। আসমাতুন বিবির বাবা শেখ ইসমাইলের অভিযোগ, বিয়ের ৭-৮ মাস পর থেকেই শেখ বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন কারণে টাকার দাবি করতে থাকে। সম্প্রতি, নতুন বাড়ি তৈরি করবে বলে ২৪-২৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই দাবি মতো টাকা না দেওয়ায়, শনিবার রাতে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে, আত্মহত্যার নামে চালানোর চেষ্টা করছে।

thebengalpost.net
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ:

উল্লেখ্য যে, শনিবার রাতে আসমাতুন বিবির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সাঁজোয়াল এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির বাথরুম থেকে। হাতে একাধিক ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে বলেও জানা গেছে। এই ঘটনায় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন বাবুল। পেশায় পুলিশ কর্মী বাবুল বর্তমানে তমলুকে কর্মরত ছিলেন। রবিবার সকালে বাবুল জানান, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো। হঠাৎ করে গতকাল (শনিবার) রাতে বাথরুমের ভিতরে গিয়ে হাত কেটে ফেলে। এরপর, গলায় ওড়না ঝুলিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করে! খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখানে চিকিৎসকেরা বছর ৩৫-র আসমাতুন বিবি-কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে খড়্গপুরের সাঁজোয়াল এলাকাতে। জানা যায়, ওই দম্পতির বছর তিনেকের একটি সন্তানও আছে। অন্যদিকে, শনিবার দুপুরে পুলিশের সামনেই মেয়ের পরিবার এবং ছেলের পরিবারের লোকেরা কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। যদিও, ঘটনার পরই রবিবার সকালে পুলিশ শেখ বাবুলকে আটক করে। তাঁকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবুল! যদিও, মৃতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে, ছুরি দিয়ে দু’হাতে আঘাত করা হয়। তারপর খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে দেহ রেখে দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা চলে আসে। রবিবার সকালে তাঁরা নানা নাটক করার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ! এদিকে, বাবুল-কে খড়্গপুর টাউন থানায় নিয়ে গিয়ে, সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে পুলিশের তরফে। তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে।