দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ ফেব্রুয়ারি: আড়াল করে দিচ্ছিল বিজ্ঞাপন! এই অপরাধেই কি মেদিনীপুর কলেজ স্কোয়ারের শহীদ মূর্তি ঘিরে থাকা দুষ্প্রাপ্য গাছ কাটতে হাত ‘কাঁপলনা’ বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থার ভাড়াটে দুষ্কৃতীদের? শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জেলা শহর মেদিনীপুরের ঘটনায় উঠছে তেমনই প্রশ্ন! প্রসঙ্গত, জেলা শহর মেদিনীপুরের কলেজ কলেজিয়েট মাঠের সামনে তথা কলেজ স্কোয়ার হিসেবে পরিচিত এলাকায় মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তি স্থাপন সহ সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হয়েছিল মেদিনীপুর পৌরসভার উদ্যোগে। নানা বাহারি ও বহুমূল্য গাছপালা এবং আলোকসজ্জার মধ্য দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যায়ে ওই এলাকায় ‘সৌন্দর্যায়ন’ করা হয়েছিল। এর মধ্যে পাহাড়ি পাম, বিদেশি ঝাউ- এর মতো কিছু দুষ্প্রাপ্য গাছপালাও ছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বা শুক্রবার ভোর রাতে একদল দুষ্কৃতী সেই সৌন্দর্যায়ন তছনছ করে, প্রায় ১৪-১৫ টি দুষ্প্রাপ্য গাছ করাত দিয়ে কেটে দেয়। ন্যক্কারজনক এই কাজ ঘিরেই শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পীঠস্থান মেদিনীপুর শহরে নিন্দার ঝড় উঠেছে!

thebengalpost.net
১৪-১৫টি গাছ কাটা হয়েছে:

দুষ্কৃতী তথা পাষন্ডদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে পৌরসভা। কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান। অন্যদিকে, রাতের অন্ধকারে এই ধরনের ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কাজ যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন শহরের সচেতন নাগরিকরা। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই এলাকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া সঙ্কীর্ণমণা ও স্বার্থপর ব্যবসায়ীদের তরফেই এই কাজ করানো হয়েছে ভাড়াটে দুষ্কৃতীদের দিয়ে! বাহারি ও দুষ্প্রাপ্য ওই সমস্ত গাছপালাগুলি তাদের ‘বিজ্ঞাপন’ ঢেকে দিচ্ছিল; এই অপরাধেই নাকি সবুজ-সৌন্দর্যায়নের বলি দেওয়া হয়েছে! এমনটাই দাবি পৌর কর্তৃপক্ষের।

সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে মেদিনীপুর পৌরসভার তরফে। শুধু তাই নয় মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুলের উল্টোদিকের ওই সৌন্দর্যায়িত এলাকা থেকে সমস্ত বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং খুলে ফেলা হয়েছে! একইসঙ্গে পৌরপ্রধান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘ভারতমাতা’র বীরসন্তান তথা মনীষী ও স্বাধীনতার সংগ্রামীদের মূর্তির আশেপাশে আর কোন বিজ্ঞাপন বা হোর্ডিং লাগাতে দেওয়া হবে না মেদিনীপুর শহরে। পৌরসভার এই সিদ্ধান্তকে শহরবাসী স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে কোতোয়ালি থানার কাছে তাঁদের আবেদন, কোনভাবেই যেন এই তদন্ত ধামাচাপা না পড়ে! প্রকৃত দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন দলমত নির্বিশেষে শহরের সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলও।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুলের উল্টোদিকের সৌন্দর্যায়ন তছনছ দুষ্কৃতীদের: