thebengalpost.net
দুটি স্করপিও গাড়ি থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জুন: হুগলি থেকে খড়্গপুর, পুরী থেকে বেলদা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল মহিলা ছিনতাইকারীদের এই গ্যাং। রথের মেলা কিংবা যেকোনো উৎসব-অনুষ্ঠানে ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে, মহিলাদের হার ছিনতাই করাই ছিল এদের পেশা! হুগলি থেকে দুটি স্করপিও গাড়িতে করে এরা রওনা দিয়েছিল পুরীর বিখ্যাত রথের মেলায়। সেখান থেকে খড়্গপুর। তারপর জাতীয় সড়ক ধরে সোজা পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার এক ব্যক্তির বাড়িতে আয়োজিত মহোৎসবের অনুষ্ঠানে। ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে মহিলাদের হার কিংবা সোনার গহনা চুরি করাই ছিল উদ্দেশ্য। আর, সেই উদ্দেশ্য পূরণ করতে গিয়েই হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় এক মহিলা ছিনতাইকারী! এরপরই, নিজেদের দুটি স্করপিও গাড়িতে করে চম্পট দেয় ওই গ্যাংয়ের বাকি মহিলারা। তবে, বেশিদূর যেতে পারে না। বেলদা থানার পুলিশের তৎপরতায় এবং নারায়ণগড় থানার পুলিশের সহযোগিতায় রামপুরা লেবেল ক্রসিং এর কাছে দু’টি গাড়িকেই আটকানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ১২ জন মহিলা, ২ জন ড্রাইভার সহ ১৫ জনের এই গ্যাং-কে আটক করে বেলদা থানার পুলিশ। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার দুপুরে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয় বেলদা থানার তরফে। আটক করা হয়েছে গাড়ি দু’টিও।

thebengalpost.net
উত্তেজনা স্থানীয় পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলদা থানর শালাজপুরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সৌগত চন্দের বাড়িতে মহোৎসবের অনুষ্ঠান চলছিল। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে, খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলেও অনেকেই বাড়ি যেতে না পারায় ভিড় জমে যায়। আর, সেই সুযোগেই ছিনতাইবাজেরা স্করপিও থেকে নেমে ওই ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এরপর, একাধিক মহিলার সোনার হার ছিনিয়ে নিতে থাকে। সেই সময়ই এক ছিনতাইবাজকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন চন্দনা দে নামে এক গৃহবধূ। জানা যায়, ওই গৃহবধূ কেশিয়াড়ি থানা এলাকা থেকে শালাজপুরে মহোৎসবের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। মহোৎসবে খাওয়াদাওয়া-র পর দুপুরে প্রচুর বৃষ্টির কারণে তিনিও প্যান্ডেলের ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই, দুটি স্করপিও গাড়িতে করে এসে ছিনতাইবাজ মহিলারা ওই ভিড়ে মিশে যায়। একাধিক মহিলার হার ছিনতাই করার পর, চন্দনা দে নামে ওই গৃহবধূর হার ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে যায় এক ছিনতাইকারী। এরপরই, পুলিশে খবর দেওয়া হলে, জাতীয় সড়কে মোবাইল ডিউটিতে থাকা বেলদা থানার একটি পুলিশ ভ্যান পিছু ধাওয়া করে ওই দুটি স্করপিও গাড়ির। খবর দিয়ে দেওয়া হয় নারায়ণগড় থানাতেও। রামপুরা লেবেল ক্রসিং এর কাছে পুলিশ পাকড়াও করে ওই দুটি গাড়িকে। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তথ্য প্রমাণ মেলার পর শুক্রবার ওই গ্যাং- এর ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনায় জানা গেছে, ১৫ জনের মধ্যে ১১ জন মহিলা সহ ১৪ জনই হুগলি জেলার ব্যান্ডেলের বাসিন্দা। ১ জন মহিলা খড়্গপুরের বাসিন্দা। গত রবিবার তারা রথ দেখতে এবং কলা বেচতে (ছিনতাই করতে) পুরী পাড়ি দিয়েছিল। বুধবার পুরী থেকে ফিরে খড়গপুরে একটি হোটেলে ছিল এই অভিযুক্তরা। আর, বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ হঠাৎই জাতীয় সড়কের পাশে মহোৎসবের অনুষ্ঠান এবং মহিলাদের ব্যাপক ভিড়ভাট্টা দেখতে পেয়ে ‘ছিনতাইয়ের লোভ’ সামলাতে না পেরে, ভিড়ে ঢুকে গিয়ে ছিনতাই শুরু করে! অনুষ্ঠান বাড়িতে খেতে আসা চন্দনা দে, দোলন গায়েন, পুষ্প দাস প্রমুখ প্রত্যেকের গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বেলদা থানার পুলিশ ধৃতদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুরো বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হন। শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করে দাঁতন আদালতে পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

thebengalpost.net
দুটি স্করপিও গাড়ি থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ: