দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ সেপ্টেম্বর:“এই ৪২ দিনে আমরা বুঝেছি মানুষ কিভাবে মানুষের পাশে থাকতে পারে। সাধারণ মানুষের জন্যই ‘অভয়ার বিচারে’র জন্য আন্দোলন আর জি কর ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং দেশের বাইরে পৌঁছে গিয়েছে। আমরাও সেই দায়বদ্ধতা থেকেই ‘মানুষ’ হিসেবে মানুষের এই দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য ছুটে এসেছি। শুধু চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবেই নয়, মানুষ হিসেবেও আমাদের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি।”পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের কানাখালিতে এক হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন আর জি কর মেডিক্যালের নার্সিং স্টাফ সুচিস্মিতা মজুমদার। উল্লেখ্য যে, ঘোষণা মতোই শনিবার বন্যাকবলিত এলাকায় ‘অভয়া ক্লিনিক’ আর ‘অভয়া ত্রাণশিবির’ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন আর জি মেডিক্যালের প্রতিবাদী জুনিয়র চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এদিন জুনিয়র চিকিৎসকদের একটি ১৭ জনের দল কলকাতা থেকে বন্যা বিধ্বস্ত কেশপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকরাও।
এদিন, কেশপুরের তাবাগেড়িয়া গ্রামে জুনিয়র চিকিৎসকদের অভয়ার ক্লিনিকে ভিড় উপচে পড়ে। মেডিসিন, সার্জারি, গাইনোকলজি, পেডিয়াট্রিক সহ বিভিন্ন বিভাগের জুনিয়র ডাক্তাররাই কেশপুরের এই অভয়া ক্লিনিকে পরিষেবা দেন। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, ওআরএসএল- প্রভৃতিও তুলে দেওয়া হয়। কানাখালি গ্রামে গিয়ে হাঁটু সমান জলে দাঁড়িয়েই রোগী দেখেন প্রতিবাদী ডাক্তাররা। মূলত বন্যা কবলিত এলাকার ‘গৃহবন্দী’ অসহায় মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ জুনিয়র চিকিৎসকদের। পাশাপাশি এদিন ‘অভয়া ত্রাণশিবির’ থেকে শুকনো খাবার সহ চাল, ডাল তুলে দেওয়া হয় দুর্গত মানুষের হাতে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই দুঃসময়ে তাঁরা মানুষদের পাশে থাকতে চেয়েছেন বলে দাবি জুনিয়র চিকিৎসকদের। একসঙ্গে, মানুষকে তাঁরা এটাও স্মরণ করিয়ে দিতে ভোলেন নি, “আমরা মানুষকে এই বার্তাও দিতে চেয়েছি, অভয়া বা তিলোত্তমা কোন শহর বা নগরের মেয়ে নয়; তাঁদের বাড়ির মেয়ে। তাই, বিচার না মেলা পর্যন্ত যেভাবে এতদিন আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, বাকি দিনগুলোতেও পাশে থাকুন।”