দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জানুয়ারি: আগের দিন রাতে মেলা গিয়ে একটি মদের বোতল কুড়িয়ে পেয়েছিলেন দুই বেয়াই। নতুন (সিল করা) বোতল নয়, তবে বেশ অনেকটাই মদ ছিল বলে পরিবারের দাবি। সেই বোতল নিয়ে সকালে দু’জনে মিলে খেতে বসেছিলেন। সবেমাত্র এক চুমুক করে দিয়েছিলেন। তাতেই গোটা শরীরে কাঁপুনি এসে প্রায় অচৈতন্য হয়ে যান দু’জনই। দ্রুত পরিবারের লোকজন তাঁদের নিয়ে যান স্থানীয় হাসপাতালে। হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই গাড়িতে মৃত্যু হয় একজনের। চিকিৎসা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় অপরজনের। বুধবার দুপুরের এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। ঘটনাটি ঘটে গড়বেতা থানার চন্দ্রকোনা রোড পুলিশ বীট হাউসের অধীন উড়াসাই গ্রামে। মৃত দু’জনের নাম হল যথাক্রমে গনেশ রুইদাস (ওরফে, বৈদ্যনাথ রুইদাস, বয়স ৫৬) এবং সন্তু রুইদাস (বয়স ৬২)। দুই বেয়াইকে মৃত ঘোষণা করা হয় চন্দ্রকোনা থানার অধীন চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালের তরফে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁদের দেহ পাঠানো হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বলতে পারব, ঠিক কি কারণে মৃত্যু!” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, “আপনাদের মাধ্যমেই শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

জানা যায়, উড়াসাই গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ রুইদাসের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে এসেছিলেন কেশপুর ব্লকের মুগবসান
এলাকার বাসিন্দা সন্তু রুইদাস এবং গড়বেতার বাসিন্দা গনেশ রুইদাস (বৈদ্যনাথ রুইদাস)। সন্তু এবং গনেশ আত্মীয়তার সম্পর্কে বেয়াই হন। অনুষ্ঠান শেষে দু’জনেরই আজ (বুধবার) বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু, সকালে ওই কুড়িয়ে পাওয়া বোতল থেকে মদ্যপান করে দু’জনই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাঁদের চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরই চিকিৎসক সন্তু রুইদাসকে মৃত বলে ঘোষণা করে। গনেশ রুইদাসের চিকিৎসা শুরু হয়। তবে, কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরও মৃত্যু হয়! মৃত গনেশ রুইদাসের ছেলে সাহেব রুইদাস বলেন, “আমি বাড়িতে (গড়বেতাতে) ছিলাম। বাবা (গনেশ রুইদাস) অনুষ্ঠান উপলক্ষে বোনের বাড়ি (উড়াসাই গ্রামে) গিয়েছিল। তারপর সেখান থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মেলায় গিয়েছিল। শুনলাম, সেখানে একটি মদের বোতল কুড়িয়ে পেয়েছিল। বোতলটি সিল করা ছিল না। ওই বোতল থেকেই আজ দু’জনে মদ পান করে। এক চুমুক করে দেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে আনার পথেই একজনের (সন্তু রুইদাসের) মৃত্যু হয়। আমার বাবার (গনেশ রুইদাসের) মৃত্যু হয় চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই!” ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।