দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ অক্টোবর: জেলা শহর মেদিনীপুর তথা সমগ্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, মানবদরদী এবং সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ড. সত্যশঙ্কর গোস্বামী প্রয়াত হলেন। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩। তিনি অবিভক্ত মেদিনীপুরের সুপ্রাচীন শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বিদ্যাসাগর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ছিলেন। অবসরের পর, তাঁর শিক্ষা-জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও মানবপ্রেমের আলোয় আলোকিত হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একটি বিশাল অংশ। তাই শুধু অধ্যাপক বা অধ্যক্ষ নন, তিনি তাঁর উর্ধ্বে উঠে অনেকের কাছেই হয়ে উঠেছিলেন একজন সাক্ষাৎ গুরুদেব তুল্য মানুষ! পরিচিত ছিলেন কানাই গোস্বামী নামে। তাঁর সান্নিধ্যে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন শিক্ষা ও সমাজ জগতের হাজার হাজার মানুষ। সেই সত্যশঙ্কর গোস্বামী বার্ধক্যজনিত কারণে, রবিবার সকালে প্রয়াত হয়েছেন জেলা শহর মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত জেলার শিক্ষানুরাগী থেকে শুরু করে তাঁর অগণিত ভক্ত বৃন্দ।

thebengalpost.net
ড. সত্যশঙ্কর গোস্বামী (৮৩) :

উল্লেখ্য যে, প্রথমে অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিদ্যাসাগর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কার্যভার সামলেছেন সাফল্যের সাথে। তারপরও, বহু বছর ধরে তিনি এই কলেজের একজন পরামর্শদাতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে যুক্ত থেকেছেন। শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের অধ্যাপক হওয়ার সুবাদে অর্জন করেছিলেন, ‘মনস্তত্ত্ব’ ও মানবিক আচার-আচরণ সম্পর্কিত সুগভীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। ড. গোস্বামী তাঁর সেই জ্ঞান, উপলব্ধি ও মানবপ্রেম বিকশিত করার চেষ্টা করে গেছেন আজীবন। কর্মসূত্রে থাকতেন মেদিনীপুর শহরে, তবে কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর ছিল তাঁর জন্মভূমি। পরবর্তী সময়ে সেখানেই গড়ে তুলেছিলেন একটি ‘আশ্রম’ (কালাচাঁদের আশ্রম)। অগণিত ভক্তবৃন্দের সঙ্গে সেখানে তিনি মিলিত হয়ে ভাব বিনিময় করতেন। তাঁদের কাছে তিনি ছিলেন ‘গুরুদেব’। শোকার্ত তাঁর সেই ভক্তকূলও! সপ্তাহখানেক চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে তাঁর প্রয়াণ হয় শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। দুপুরে তাঁর প্রাণহীন দেহ ভিটিটি (VTT) কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় শোকজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে। তারপর, তাঁর দেহ পৌঁছয় আনন্দপুরে। সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে পরিবার সূত্রে।