দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ আগস্ট: “সঠিক পরিমাণে ঋণ ও পরিষেবা না দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর বাসীকে ঠকাচ্ছে ব্যাংকগুলি”! মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে বসে এভাবেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন রাজ্য সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। ব্যাংক কর্তাদের সঙ্গে জেলা শহরে একটি মিটিংয়ের পর তিনি এও অভিযোগ করলেন, “রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে ব্যাঙ্কের কাছে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে উপভোক্তাদের।” এই সমস্ত বিষয়েই আলোচনার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৩৬৯ টি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখা থেকে আধিকারিকদের ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এই জেলার চার মন্ত্রী যথাক্রমে মানস রঞ্জন ভূঁইয়া, হুমায়ূন কবীর, শিউলি সাহা ও শ্রীকান্ত মাহাত। ছিলেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক পীনাকী রঞ্জন প্রধান সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও। বৈঠক থেকে ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের এই বিষয়ে বার্তা দেওয়া হয়। যাতে IFSC CODE সহ বিভিন্ন সমস্যা মিটিয়ে উপভোক্তাদের সঠিক পরিষেবা দেওয়া হয় এবং প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের টাকা দ্রুত অ্যাকাউন্টে পেয়ে যান, সেই বিষয়ে ব্যাংকগুলিকে সচেষ্ট হওয়ার আবেদন জানানো হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া।

thebengalpost.in
সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া,‌‌হুমায়ূন কবীর, শিউলি সাহা ও শ্রীকান্ত মাহাত :

মঙ্গলবার বৈঠক শেষে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া সহ চার মন্ত্রী একটি সাংবাদিক বৈঠকে মিলিত হন। মানস বাবু বলেন, “বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা সহ সমস্ত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পর টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে উপভোক্তাদের কাছে পাঠানো হয়। এই জেলার ব্যাঙ্ক গুলি নানা ভাবে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছে। পাশবই আপডেট হচ্ছে না। আইএফএসসি কোড দেওয়া হচ্ছে না। আধার কার্ড লিঙ্ক করা হচ্ছে না। রোদে, জলে ঘন্টার পর ঘন্টা গ্রাহকদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এদিকে, ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে চালু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, এতে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকবে। ব্যাঙ্কগুলি এখন থেকে এবিষয়ে উদ্যোগী না হলে মহিলারা টাকা পেতে হয়রানির শিকার হবেন।” এদিন, ক্রেডিট ডিপোজিট রেশিও অর্থাৎ গ্রাহকদের লোন বা ঋণ কম দেওয়া নিয়েও ব্যাঙ্ক গুলিকে তোপ দাগেন মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। তথ্য তুলে ধরে জানান, “এই জেলার সমস্ত ব্যাঙ্কগুলিতে গ্রাহকদের জমার পরিমান ২৫,৬১৭ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা, অথচ ঋণ দেওয়া হয়েছে মাত্র ১১,১১০ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। মাত্র ৪৩.৩৩ শতাংশ। যা অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক কম। কৃষি ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। ক্ষুদ্র মাঝারি ও কুটির শিল্পে ঋণ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৪১ শতাংশ। এই বিষয়ে একদিকে আমরা যেমন কো-অপারেটিভ ব্যাংকগুলিকে আরও দায়িত্বশীল হতে বলেছি। ঠিক তেমনই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি’র আধিকারিকদের কাছে হাতজোড় করে মিনতি করেছি, আপনারা জেলাবাসীর পাশে দাঁড়ান। পরিষেবা ও প্রকল্পের সুবিধাগুলো তাঁদের নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।” যদিও, বৈঠকে রিজিওনাল ম্যানেজার’রা না এসে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দের পাঠিয়ে দেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।