দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ ডিসেম্বর: “কে বাইশ, পোখরাজ আলু আমাদের রাজ্যে কেউ খায় না। বিক্রিও হয় না। তাই বাধ্য হয়েই এই আলু আমরা ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়ে পাঠাই। দয়া করে আমাদের গাড়িগুলি ভিন রাজ্যে পাঠাতে দিন। না হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব, স্টোর মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, সেইসঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে এর প্রভাব পড়বে কৃষকদের উপর। আলু বিক্রি না হলে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের কাতর আবেদন, দয়া করে ভিন রাজ্যে এই আলু পাঠাতে দিন। না হলে আপনারাই অন্তত ১৯ টাকা কেজি দরে আমাদের আলু কিনে নিন।” বুধবার বিকেলে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার অধীন পিড়াকাটা পুলিশ পোস্টের তরফে পিড়াকাটাতে আলু বোঝাই ৮টি ট্রাক আটকের পরই এই বিষয়ে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করে এই আবেদন জানিয়েছেন জেলার আলু ব্যবসায়ীরা। এর আগে এদিন দিনভর আলু গাড়ি আটককে কেন্দ্র করে পিড়াকাটা এলাকায় টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

উল্লেখ্য যে, রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ভিন রাজ্যে এখন আলু পাঠানো (রফতানি) যাবে না। রাজ্যে পর্যাপ্ত ‘আলু’ নেই বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। সেই সূত্রেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গত ২৮ নভেম্বর থেকে একাধিক নাকা পয়েন্ট করা হয়েছে আলু গাড়ি আটকানোর জন্য। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা নাগাদ গোয়ালতোড়-পিড়াকাটা রাজ্য সড়কের উপর পিড়াকাটা এলাকায় একে একে ৮টি আলু গাড়ি আটক করেন পিড়াকাটা পুলিশ পোস্টের পুলিশ কর্মীরা। ওই গাড়িগুলি ভিন রাজ্যে পাঠানো হচ্ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এরপরই, ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান অন্তত ১০০ জন আলু ব্যবসায়ী। তাঁরা পিড়াকাটা পুলিশ পোস্টের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তাঁরা আলু গাড়ি আটক। তারপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আলু ব্যবসায়ীরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার আবেদন জানান। সেই সঙ্গে এই দাবিও করেন, “হয় আমাদের আলু কিনে নিন। না হলে ভিন রাজ্যে যেতে দিন। তাছাড়া আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাব! এমনকি এর প্রভাব কৃষকদের উপরেও পড়বে।” বুধবার রাত্রি অবধি আটক আলু গাড়ি ছাড়া হয়নি পুলিশের তরফে। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর। আর তারপরই নিজেদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা তাঁরা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলার আলু ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা।