দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৩০ নভেম্বর: ঠেলায় পড়ে বিড়াল যদিও গাছে উঠেছিল, অভ্যেস না থাকায় পড়ে গেল ধপাস করে! আদালতের নির্দেশে ২০১৪ প্রাইমারি টেট থেকে দু’দফায় নিয়োগ হওয়া (২০১৭ ও ২০২১) প্রায় ৫৯ হাজার শিক্ষকের পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ করেছিল পর্ষদ। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (‘৩০ নভেম্বরের মধ্যে’ মেধাতালিকা প্রকাশের) কড়া নির্দেশে গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় ৫৯ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ব্রেক-আপ মার্কস (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, টেট, ট্রেনিং, ইন্টারভিউয়ের পৃথক পৃথক নম্বর) সহ মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আর, তা প্রকাশিত হওয়ার পর-ই চক্ষু চড়কগাছ সকলের! ‘মেধাতত্ত্বের জনক’ মানিক ভট্টাচার্য এমন নিয়োগ করেছেন যেখানে প্রার্থীরা (বর্তমানে যাঁরা শিক্ষকতা করছেন) মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ ১০০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে বসে আছেন! আর, ১০০ শতাংশ নম্বর তো ভুরি ভুরি। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ইন্টারভিউ ১০ এ ১০ অনেকেই। তর্কের খাতিরে, কোনো প্রার্থীকে ইন্টারভিউ বা টেটে একশো শতাংশ নম্বর হয়তো ‘অতিরিক্ত ভালোবেসে’ পর্ষদ দিতেই পারে, কিন্তু তা বলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক আর ট্রেনিংয়ে? বাস্তবে তেমনটা সম্ভব না হলেও, ‘অসম্ভব’-কে ‘সম্ভব’ করেছিলেন মানিক! নাকি পুরোটাই গোঁজামিল?
বঞ্চিত ও যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, “কিছুই (কোনো তথ্যই) তো নেই। পুরোটাই আসলে গোঁজামিল দিয়ে তৈরি করা তালিকা!” তাঁরা আদালতের যাওয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছেন। এদিকে, এই ধরনের ঘটনায় রাজ্য উত্তাল। মিডিয়া সরগরম। বেগতিক বুঝে পর্ষদ গতকাল অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘ভুল’ স্বীকার করেছে এবং পুনরায় মেধাতালিকা (সংশোধিত) প্রকাশের কথা জানিয়েছে। ১১ ডিসেম্বরের টেট পরীক্ষার পর তা প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৪ টেট থেকে প্রাথমিকে যে ৫৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। চলছে সিবিআই তদন্ত। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে রাজীব দীক্ষিতের মতো ‘বহু’ বিতর্কিত শিক্ষকদের! তবে, কি তাঁদের বাঁচাতেই এই ধরনের ‘বিতর্কিত’ মেধাতালিকা? প্রশ্ন উঠছে। কারণ, তালিকা অনুযায়ী, অনেকেই উচ্চ মাধ্যমিক ১০ এ ১০ থেকে ১০ এ ১০.৯৬; মাধ্যমিকে ৫ এ ৫.৭৫; ট্রেনিংয়ে ১৫’য় ২৪ পেয়েছেন! আর, ইন্টারভিউতে ১০ এ ১০ তো কয়েক হাজার। আবার, কেউ কেউ ১০ এ মাত্র ১-২! শেষমেশ বাধ্য হয়েই পর্ষদ ‘বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে নিজেদের ‘ভুল’ (নাকি ‘সংগঠিত অপরাধ’?) স্বীকার করে নিয়েছে!