দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুন: এগিয়ে এলোনা প্রতিবেশীরা, নীরব দর্শকের ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অশীতিপর বৃদ্ধের সৎকারে এগিয়ে এলো সেই রেড ভলান্টিয়াররা। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন জ্বরে ভুগছিলেন, তারপর বাড়িতেই মৃত্যু হয় অশীতিপর প্রৌঢ়ের। কোভিড সন্দেহে প্রতিবেশী থেকে গ্রামের মানুষ, সহযোাগিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এমনকি গ্রামের শ্মশানে সৎকারেও বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত নীরব থেকে এড়িয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে খড়্গপুর গ্রামীণের গোপালী এলাকার ৮১ বছরের প্রৌঢ় হরিপদ চৌধুরীর সৎকারে এগিয়ে এলো রেড ভলান্টিয়ার্স সদস্যরা। সৎকার করা হলো, সিপিআইএম কর্মী রঞ্জন দে’র ফাঁকা জমিতে।
খড়্গপুর গ্রামীন থানার গোপালী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জঙ্গল ঘেরা পশ্চিমপাত্রী গ্রামের ৮১ বছরের বয়স্ক হরিপদ চৌধুরী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সোমবার। বৃদ্ধ বয়সে একমাত্র মেয়ের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। মেয়েরও মৃত্যু হয় ছয় বছর আগে। নাতি কৃষ্ণ চৌধুরী ও নাত বৌ এর কাছেই ছিলেন। দিন মজুরী করেই সংসার চলত। এই পরিস্থিতিতে ক’দিন জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয় বৃদ্ধ হরিপদ’র। সৎকারের জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা এবং সরকারী সাহায্য না পেয়ে মুষড়ে পড়েন নাতি কৃষ্ণ চৌধুরী। সেই খবর পৌঁছায় গোপালীতে রেড ভোলেন্টিয়ার সহায়ক কেন্দ্রে। গোপালী লোকাল কমিটির যুবদের রেড ভোলেন্টিয়ার টীম উত্তম নাগ, প্রতীক সরকার, নগেন্দ্রনাথ মান্না, শুভম রায়, আশিষ বাগরা অর্থ দিয়ে জ্বালানির কাঠ সহ দেহ নিয়ে যাওয়ার সরঞ্জাম জোগাড় করে সেই দেহ নিজেদের কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা মাঠে সৎকার করেন। যদিও, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা প্রথমে খবর পাইনি। সব কিছু যখন জানতে পারি, তখন ওনারা অন্য ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন।” কৃষ্ণ অবশ্য কাউকে দোষ দেননি! তবে, চোখের জলে দাদু’কে বিদায় দেওয়ার সাথে সাথে, এই অচেনা যুবদের মহানুভবতাও মুগ্ধ করে তাঁকে। বেদনাশ্রু আর আনন্দাশ্রু মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়!