দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জুলাই: পাঞ্জাবের আর্টারি সীমান্ত বা ঝাড়খণ্ডের রাঁচি কিংবা নদীয়ার ফুলিয়ার সর্বোচ্চ বা সর্ববৃহৎ জাতীয় পতাকার দৌড়ে না গিয়েও, মেদিনীপুর শহরের অহংকারের মুকুটে পালক জুড়েছিল শহরের ১৪ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত দ্বারিবাঁধ স্থিত মতিঝিলের পাশে ১১০ ফুট উঁচু ৬০০ বর্গফুটের জাতীয় পতাকার পতপত করে উড়ে চলা! ২০১৮’র ৬ ই মে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের দ্বারিবাঁধ সংলগ্ন মতিঝিলের পাশে স্থাপিত সেই বিখ্যাত স্মৃতিসৌধ ও উদ্যান আজ “লজ্জায়” (পড়ুন, আগাছায়) মুখ ঢেকেছে। জাতীয় পতাকা আর নেই! আমফান ঝড়ে বা তার আগেই ছিঁড়ে গেছে। কেউ খোঁজ রাখেনি! রাখার প্রয়োজনও মনে করেনি। ঐতিহ্য, সংস্কার- এসব নিয়ে বেশি ভেবে লাভ কি। ভেবেছে, তারাই, যারা মেদিনীপুর ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি’কে প্রাণ দিয়ে আগলে রাখতে চায়। আর পাঁচটা সংস্থার মতোই একটি সংস্থা- দ্য ভয়েস অব মিডনাপুর। তবে, নামের সাথে সাথে, কাজেও তারা মেদিনীপুরের কন্ঠ হয়ে উঠতে চায়। তাই, ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের আগেই, ওই স্মৃতিসৌধ’কে স্বমহিমায় ফেরানোর উদ্যোগ নিল সংস্থা।‌ সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বর্তমান পৌর প্রশাসক দীনেন রায়।

thebengalpost.in
সৌধ থেকে উধাও জাতীয় পতাকা :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক মেদিনীপুর পুরসভার ১২৫ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে সারা পৌর এলাকা জুড়ে নানাবিধ স্থাপত্য ও স্মরণী প্রতিষ্ঠা করেছিল মেদিনীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায়, ১৪ নং ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ( বর্তমানে বিদায়ী) এর উদ্যোগে এবং মেদিনীপুর পুরসভার ব্যবস্থাপনায় ২০১৮ র ৬ মে, মতিঝিল এর পাশে একটি উদ্যান নির্মাণ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন এবং ১১০ ফুট উচ্চতায় ৬০০ বর্গফুটের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই উদ্যান নির্মাণ হয়। উদ্বোধন করেন, তদানীন্তন মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সদ্য প্রয়াত প্রণব বসু। এরপর কার্যকাল ফুরিয়ে যায় পুর পরিষদের। ১৪ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর বিশ্বেশ্বর নায়েক এর কথায়, “এরপর পুর প্রশাসকের দায়িত্বে এসডিও সাহেব আসার পর আমরা ওই উদ্যানের চাবি হস্তান্তরিত করি।” এদিকে, এক পক্ষ (১৫ দিন) গড়ালেই স্বাধীনতার গৌরবজ্বল পঁচাত্তর বর্ষের শুভ সূচনা। সাধারণ মেদিনীপুরবাসীর স্বপ্ন- স্বাধীনতার গৌরবজ্বল ৭৫ বর্ষের শুভ সূচনায় পতপত করে আবার উড়ুক সেই অহংকারের তেরঙ্গা। এদিকে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মূর্তি ঢাকা পড়েছে আগাছায়। আজ আর নেই সেই পতাকাও। দ্য ভয়েস অব মিদনাপুর এর পক্ষে, সংস্থার মুখপাত্র তথা সমাজকর্মী ও অধ্যাপক শিবদেব মিত্র জানিয়েছেন, “ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরের বুকে এই সুদীর্ঘ জাতীয় পতাকা মেদিনীপুরবাসীর কাছে গর্বের। সেই গর্ব ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা সচেষ্ট।” মেদিনীপুর পুরসভার বর্তমান পুরপ্রশাসক বিধায়ক দীনেন রায় জানিয়েছেন “সমাজসেবী সংস্থার তরফে গৃহীত এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”

thebengalpost.in
আগাছায় ঢেকেছে উদ্যান :